ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

যক্ষ্মা মুক্ত দেশ গড়তে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা প্রয়োজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
যক্ষ্মা মুক্ত দেশ গড়তে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা প্রয়োজন

ঢাকা: যক্ষ্মা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন একটি কর্মশালায় বক্তারা।   

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকার শেরাটন হোটেলে আইসিডিডিআরবি জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও স্টপ টিবি পার্টনারশিপের সহায়তায় ‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্মূল করার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ ও কৌশল খোঁজ করতে কর্মশালা আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মাসিউটিক্যালস-সহ বিভিন্ন সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেন।

কর্মশালার শুরুতেই ইউএসএআইডি'স অ্যালায়েন্স ফর কমব্যাটিং টিবি ইন বাংলাদেশ কর্মসূচির ডেপুটি চিফ অব পার্টি ডা. শাহরিয়ার আহমেদের একটি উপস্থাপনায় দেশের বর্তমান যক্ষ্মার পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেছেন। যক্ষ্মা চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় ও বিদ্যমান কর্মসূচি সম্পর্কে ধারণা দেন।

তিনি বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সারাদেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দাতাদের তহবিল কমে আসার বিষয়টি তুলে ধরেন। ২০৩৫ সালের যক্ষ্মা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পকে কার্যকরভাবে যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

টিবি-এল অ্যান্ড এএসপি, ডিজিএইচএস-এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহাফুজার রহমান সরকার টিবি নির্মূলে সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।

তিনি জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যে সরকার বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় কর্মসূচি থেকে সারা বাংলাদেশে ৬০০টিরও বেশি সাইটে অত্যাধুনিক মলিকুলার ডায়াগনস্টিকস সরবরাহ করেছে। এখন স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি দেশে ফার্স্ট লাইন টিবি ওষুধ তৈরি করে। তারা আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভরতা কমানোর ক্ষেত্রে অবদান রাখছে।

সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ইমার্জিং ইনফেকশন্স, আইসিডিডিআরবি ড. সায়েরা বানু বলেন, আমি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে যক্ষ্মা নিয়ে কাজ করার পরে এখন পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখেছি। এ নতুন বাংলাদেশে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি যক্ষ্মা মুক্ত জাতি গঠনের জন্য নতুন অঙ্গীকার নিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যক্ষ্মা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলির মধ্যে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে এনটিপির টিবি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আমরা যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করেছি। এ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে সরকার ও বেসরকারি খাতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আগে আমরা বিদেশ থেকে অনেক ওষুধ কিনে আনতাম, এখন আমাদের ফার্মা কোম্পানির সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে কিছু ওষুধ দেশেই তৈরি হচ্ছে। আমাদের ফার্মা ইন্ডাস্ট্রিগুলো যদি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রি-কোয়ালিফিকেশন অর্জনে আরও বিনিয়োগ করে তাহলে আমরা যক্ষ্মার ওষুধও রপ্তানি করতে পারব।

কর্মশালায় তিনটি দলে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি (জেনারেল ফার্মা, ইনসেপ্টা, একমি, স্যান্ডোজ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান), প্রাইভেট হাসপাতাল (এভারকেয়ার, গ্রিন লাইফ, ইবনে সিনা, এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান), ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ল্যাব এইড, প্রাভা হেলথ, এবং অন্যান্য) প্রতিনিধিরা সেশনে অংশ নেন।

গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও সরকারী সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী রোডম্যাপ তৈরির চেষ্টা করা হয়।

কর্মশালায় আরও কার্যকর ও মানসম্পন্ন যক্ষ্মা সেবা নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের অপরিহার্য ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়। অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যক্ষ্মা মুক্ত বাংলাদেশ তৈরির প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৪
আরকেআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।