ঢাকা: বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে প্রায় ৩৬ বছর ধরে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে ল্যাবএইড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ল্যাবএইড হাসপাতাল। সম্প্রতি চিকিৎসক ও উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের পথচলা এবং বাংলাদেশের বেসরকারি চিকিৎসা খাতের চালচিত্র নিয়ে কথা বলেছেন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম।
ল্যাবএইডের যাত্রা শুরুর পর গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় কী কী পরিবর্তন দেখলেন? আমাদের বর্তমান বেসরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা কতটা আশা-জাগানিয়া ও মানসম্মত?
আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছি ১৯৮৪ সালে। এরপর মনে হলো, আমি যদি একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে পারি, সেখানে অনেক ডাক্তার একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন।
তখন বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল বা পিজিতে (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যেতে হতো। ভাবলাম, যদি এমন একটা সেন্টার করা যায়, যেখানে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে এবং তা হবে মানসম্মত। মূলত এ দুই ভাবনা থেকেই ল্যাবএইডের সৃষ্টি।
একজন মানুষের চিকিৎসার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ডায়াগনসিস বা রোগ নির্ণয়।
এর ওপর ভিত্তি করেই চিকিৎসা হয়। বর্তমানে ডায়াগনসিসের ব্যাপারে বাংলাদেশ খুব ভালো অবস্থায় আছে। আমাদের রিপোর্ট নিয়ে যখন কোনো রোগী সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড বা ভারতের মতো দেশগুলোতে যান, তখন তারা কিন্তু সেগুলো (পরীক্ষা) পুনরায় করায় না। আমাদের পাশাপাশি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে।
অনেক প্রশিক্ষিত জনবলও তৈরি হয়েছে। আমরা যে চিন্তা নিয়ে শুরু করেছি, অন্তত রোগী তার রোগটা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানুক, তা কিন্তু আমরা করতে পেরেছি।
অবকাঠামো ও সক্ষমতায় কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে?
১৯৯৫ বা ’৯৬ সালে আমার মাকে নিয়ে এনজিওগ্রাম করাতে ভারতে গেলাম। আমরা চারজন তিন দিন সেখানে থাকলাম। চার থেকে পাঁচ লাখ রুপি খরচ হলো।
২০০৩ সালে আমরা হৃদরোগের জন্য বিশেষায়িত ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল শুরু করলাম। নব্বইয়ের দশকে মায়ের একটি এনজিওগ্রাম করাতে যেখানে সব খরচ মিলিয়ে ব্যয় হলো ভারতীয় রুপিতে চার-পাঁচ লাখ, সেখানে আজ আমরা একই এনজিওগ্রাম ১০-১২ হাজার ভারতীয় রুপিতে ল্যাবএইডে করাতে পারি। ল্যাবএইডের পাশাপাশি এখন হৃদরোগের জন্য আরো ২০-৩০টি প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে। দেশে এখন দৈনিক হাজারখানেক এনজিওগ্রাম হয়, আমাদের এখানে হয় ৩০-৪০টি।
পাশাপাশি আমাদের দেশে আগে তাৎক্ষণিক বা জরুরি চিকিৎসা সেভাবে ছিল না। এখন কিন্তু আমাদের মতো এ রকম বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে, যেখানে বিশেষায়িত চিকিৎসার পাশাপাশি জরুরি চিকিৎসা হয়, প্রাইমারি এনজিওপ্লাস্টি হয়, সার্জারিও (অস্ত্রোপচার) হয়। তো, এই যে জরুরি বা মধ্যরাতেও ডায়াগনসিস ও বিশেষায়িত চিকিৎসা হতে পারে—এই ক্ষেত্রে আমরা পথিকৃৎ। আমাদের মডেল আজ অনেকেই অনুসরণ করছে। একজন চিকিৎসক ফুল টাইম একটা হাসপাতালে কাজ করবে, হাসপাতালে চার-পাঁচ শ নার্স থাকবে, নিজস্ব লন্ড্রি ও ক্যাফেটেরিয়া থাকবে—আগে এ রকম ধারণাই ছিল না। এটা কিন্তু আমরা প্রথম শুর করি। আজ আমাদের মতো আরো ১০০টি বেসরকারি হাসপাতাল হয়ে গেছে, যারা মানসম্মত চিকিৎসা দিচ্ছে।
বেসরকারি হাসপাতাল অনেক হয়েছে, মান কি সেভাবে আসলেই বেড়েছে?
বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫ হাজারের মতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল আছে। এর মধ্যে ৫০০টির মান ভালো। ১০০টি হয়তো আন্তর্জাতিক মানের। এখন ১০০ বা ৫০০ থেকে কীভাবে ১৫ হাজারে নেওয়া যায়, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এর জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
মান বাড়ানো যায় কীভাবে?
ভারতে যেটা হয়, একটা অ্যাক্রেডিটেশন (স্বীকৃতি) থাকে। দুই বছর পর পর অডিট হয়, লাইসেন্স নবায়ন করা হয় এবং ডাক্তার-নার্স সবাইকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো উন্নত করা হয়। এভাবে কিন্তু আমাদের ১০০ হাসপাতালকে পাঁচ হাজারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এটা রাতারাতি সম্ভব নয়, পাঁচ বছরের একটা পরিকল্পনা লাগবে। আমি কখনোই বলব না, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সব হাসপাতাল ভালো। কিন্তু এটাও আমি বলতে পারি, আমরা যে বাচ্চা প্রসব করার ক্ষেত্রে ৮০ হাজার টাকা নিই, আমি নিজে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেখেছি যে তিন হাজার টাকায় ওরা সিজারিয়ান অপারেশন করে। চার হাজার টাকায় গলব্লাডার অপারেশন করে। ৯৭ শতাংশ রোগী ভালো থাকে। এখন মান নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া উচিত। পুলিশি কার্যক্রম না করে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে অ্যাক্রেডিটেশনের মাধ্যমে পাঁচ বছরে অন্তত ২০ শতাংশ, অর্থাৎ তিন হাজার হাসপাতালকেও একটা পর্যায়ে যদি নিয়ে আসতে পারতাম, আমরা তখন বলতে পারতাম, বাংলাদেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা নির্ভরযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানের।
অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারত বা অন্যান্য দেশে যাচ্ছেন। এখানে কি আস্থার একটা সংকট রয়ে গেছে?
পৃথিবীর সব দেশেই কিছু লোক অন্য দেশে যায়, যাবেই। এর মানে কি আমাদের কোনো ভুল নেই? আছে; এবং এগুলো নিয়ে এতক্ষণ কথাও বললাম আমরা। বছরে আমাদের সাড়ে তিন লাখ লোক দেশের বাইরে যায় চিকিৎসার জন্য। আমাদের ল্যাবএইডে কিন্তু বছরে ২০ লাখ লোক আসে। সুতরাং ভারতে বা অন্য দেশে যারা যাচ্ছে, তা খুব বড় সংখ্যা নয়। কিন্তু এটা নিয়ে আমাদের আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। ভাবতে হবে, আমাদের হাসপাতালগুলোতে যারা আসছে, তারা আমাদের সেবায় সন্তুষ্ট হতে পারছে কি না।
আপনার চোখে সরকারি খাতের চিকিৎসাব্যবস্থার চিত্র কেমন?
ঢাকা মেডিক্যালের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো। কিন্তু আপনি নিজেই পত্রিকায় দেখবেন, ঢাকার বাইরে অনেক হাসপাতালে ডাক্তার ও প্রশিক্ষিত নার্স নেই। মেশিন পড়ে আছে, কিন্তু চালু হয়নি। এর মানে অবকাঠামোগত সক্ষমতা আছে। ফলে এখানেও একটা সমন্বিত প্রয়োগ দরকার। সমন্বিত একটা মানোন্নয়ন কর্মসূচি আসলে সরকারি ও বেসরকারি দুই খাতেই প্রয়োজন। আমাদের ডাক্তার ও নার্স-টেকনোলজিস্টদের সনদই দুই বছর পর পর নবায়ন হওয়া উচিত। এটা সরকারকে করতে হবে। আমাদের চিকিৎসাসেবা একদিকে যেমন বিকেন্দ্রীকরণ অর্থাৎ দেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে, তেমনি সেসব জায়গায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও টেকনোলজিস্ট—সবই রাখতে হবে।
আমাদের মেডিকেল টেকনিশিয়ান ও টেকনোলজিস্টদের মান কেমন?
আমাদের ১২ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী। ডাক্তার এক লাখ ৭০ হাজার, নার্স ৬০ হাজার, টেকনিশিয়ান ৮০ হাজার। এটা কিন্তু আশির দশকে বলতে গেলে ছিলই না। আজকে বাংলাদেশে প্রায় ৫৬ হাজার টেকনোলজিস্ট আছে। আমরা কিন্তু বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল টেকনোলজি করেছি। আমাদের দেখাদেখি এখন এ ধরনের প্রতিষ্ঠান অনেক হয়ে গেছে। সুতরাং টেকনোলজিস্টদের ব্যাপারেও আমরা একটা আশাব্যঞ্জক জায়গায় আছি। কিন্তু এখানেও ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ দরকার।
অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুয়া ল্যাব রিপোর্ট বানানো হয় বলে অভিযোগ আছে।
ধরুন, আমাদের প্রায় আট হাজার ল্যাব আছে। এর মধ্যে ৮০০ ল্যাব ভালো। তো, বাকিগুলো যে ভালো না, সে বিষয়ে তো তদারকি করতে হবে। আরেকটা বিষয়, কোনো প্রতিষ্ঠানের যদি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকে, তাকে পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া উচিত না। আমাদের দেশের ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ল্যাব রিপোর্ট অন্যদের থেকে করায়। অনেকে সাদা রিপোর্ট বানিয়ে দেয়।
বেসরকারি হাসপাতালের খরচ নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন ও ক্ষোভ। খরচ সাধারণের নাগালের বাইরে কেন?
আমাদের জন্য সরকারের কোনো বিশেষ ভর্তুকি নেই। কোনো বিশেষ বরাদ্দ বা ব্যাংকঋণ নেই। এর মানে, আপনি একটি মুদির দোকান করলে যে রকম ১৬ শতাংশ সুদ দিতে হয়, এখানেও আমাদের তেমন দিতে হয়। কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য ব্যয় মিলিয়ে অনেক খরচ। বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে চিকিৎসার খরচ একটু বেশি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কতটুকু বেশি? আপনি যদি ভারতের এসকর্টসে (ফোর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউট, হৃদরোগের চিকিৎসায় ভারতের সেরা হাসপাতালগুলোর একটি) বা ম্যাক্স হাসপাতালে (ভারতের আরেকটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল) যান, তাদের চার ভাগের এক ভাগ আমাদের খরচ। আবার ব্যাঙ্ককের ১০ ভাগের এক ভাগ এবং সিঙ্গাপুরের তুলনায় ২০ ভাগের এক ভাগ খরচ আমাদের। একটা উদাহরণ দিই। প্রোস্টেট অস্ত্রোপচারে যে রোবটিক সার্জারি করাতে হয়, সেই যন্ত্রটি আমাদের দেশে নেই। সিঙ্গাপুরে গিয়ে একজন বাংলাদেশির এই সার্জারি করাতে খরচ হয় ৮০ লাখ টাকা। এই মেশিনটা আমরা আনতে চাই। তখন আমাদের এখানে প্রতি অস্ত্রোপচারে খরচ হবে মাত্র পাঁচ লাখ টাকা। এর মানে, খরচের ব্যাপারটা আপেক্ষিক। তবে চাইলে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে খরচ কমানো থেকে শুরু করে অনেক কিছু করা যায়। ভারতে একটা প্রকল্প আছে—আয়ুষ্মান ভারত। ১০ কোটি পরিবারের ৪০ কোটি লোককে ওরা চিকিৎসা দেয় ন্যূনতম খরচে। এটি কিন্তু আমাদের দেশেও সম্ভব।
অঙ্গ প্রতিস্থাপনে বাংলাদেশের তেমন অগ্রগতি দেখছি না আমরা। এর কারণ কী?
দেখুন, আজ থেকে ১৫ বছর আগে কয়েকটি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে কিছু নেতিবাচক প্রতিবেদন হয়েছিল। সেই যে আমাদের এখানে অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রায় বন্ধ হয়ে গেল, এর পর থেকে সবাই ভারতে যাচ্ছে। এখানে একটা অঙ্গ প্রতিস্থাপন হলে হুলুস্থুল হয়ে যায়, পুলিশ আসে। আমাদের সার্জনরা (শল্যচিকিৎসক) গ্রেপ্তার হওয়ার মতো অবস্থায় চলে যায়। এ জন্য আমরা বলতে চাই, স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আমরা যারা আছি, আমরা আপনাদেরই মানুষ। সরকার, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, সাধারণ মানুষ—আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের সঙ্গে পুলিশি ব্যবহার না করে তদারকি ও সহযোগিতার পথে যেতে হবে। তখন অঙ্গ প্রতিস্থাপনও আমরা হাজার হাজার করতে পারব। আমাদের একজন চিকিৎসক, অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম, তিনি দেড় হাজারের বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সফলভাবে। এই কাজ তিনি করেন মাত্র আড়াই লাখ টাকা খরচে, যেখানে ভারতে খরচ হয় ১৫ লাখ টাকা। আমাদের কি এমন চিকিৎসক আর নেই? অবশ্যই আছে। কিন্তু এখন ডাক্তাররা ভয় পান। আমরা ল্যাবএইডে কিন্তু চারটি লিভার (যকৃৎ) প্রতিস্থাপন করেছিলাম। এর মধ্যে একজন রোগী মারা গেলেন। যিনি লিভার দিলেন, তিনি পরে দাবি করতে থাকলেন যে তিনি নাকি লিভার বিক্রি করেছেন। ওই যে নেতিবাচক প্রচারণা হলো, আমরা পরে আর এটা করার সাহস পেলাম না। আমি বলছি, ভারতের ভিসা আমাদের দরকার নেই। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সক্ষমতাও আমাদের হাসপাতালগুলোর আছে।
এ ক্ষেত্রে সমাধান কী?
শুধু স্পষ্ট নীতিমালা না থাকা এবং নেতিবাচক প্রচারণার কারণে বাংলাদেশে অঙ্গ প্রতিস্থাপনে সেভাবে অগ্রগতি হচ্ছে না। একটা নীতিমালা (আইন) আছে, কিন্তু সেখানে অনেক ধোঁয়াশা ও অস্পষ্টতা। একটা বিষয়, মৃত মানুষের কিডনিও কিন্তু জীবিতদের দেহে প্রতিস্থাপন সম্ভব। কিন্তু আমাদের দেশে এ নিয়ে পরিষ্কার নীতিমালা না থাকায় চিকিৎসকরা সাহস করছেন না। ভারতে কিন্তু প্রতিস্থাপনের ৬০ শতাংশ কিডনিই মৃত মানুষের। এ জন্যই বলছি, স্পষ্ট নীতিমালা দরকার; এবং বিষয়টিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সরকার ও গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে বড় পরিসরে প্রচার-প্রচারণা দরকার। ধরুন, ১০০ রোগীর মধ্যে ৯৯ জনের প্রতিস্থাপন আমরা সফলভাবে করলাম, কিন্তু একজনেরটা কোনোভাবে সফল হলো না, তখন এ নিয়ে অনেক বেশি প্রতিক্রিয়া হয়।
চিকিৎসা প্রার্থী বা সেবাগ্রহীতার চোখ দিয়ে দেখলে বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় ঘাটতি বা দুর্বলতা কী বলে মনে করেন? এই ঘাটতি দূরীকরণে আপনার পরামর্শও জানতে চাই।
সবচেয়ে বড় দুঃখের বিষয় হলো, চিকিৎসার জন্য দেশের সরকারি হাসপাতালে একজন দরিদ্র মানুষের অনেক সময় ব্যয় হয়। আর বেসরকারি হাসপাতালের সামনে এসে তিনি দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। কারণ তাঁর পকেটে টাকা নেই। আমার মনে হয়, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আমরা সবাই একসঙ্গে আন্তরিকভাবে চাইলে এই ঘাটতি দূর করা সম্ভব।
আরেকটা বিষয়, আমাদের মানুষের মধ্যে সেই অর্থে সঞ্চয়ের মানসিকতা নেই। এটা পরিবর্তন করতে হবে। আপনি যদি প্রতি মাসে উপার্জনের ৫ শতাংশও চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সঞ্চয় করেন, তাহলে যেকোনো দুর্ঘটনা বা অসুখে এটা আপনাকে বড় সমর্থন দেবে। আপনি অকূলপাথারে পড়ে যাবেন না।
সূত্র: কালের কণ্ঠ