ময়মনসিংহ: চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজনের সঙ্গে এক ইন্টার্নি চিকিৎসকের বাক-বিতণ্ডা হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষের দরজা ও জানালা ভাঙচুর করে কর্মবিরতিতে গেছেন ইন্টার্নি চিকিৎসকেরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাসপাতালে কর্মরত সকল ইন্টার্নি চিকিৎসকেরা কর্মবিরতির পাশাপাশি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনকারী ইন্টার্নি চিকিৎসকরা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক এমদাদুল হকের ছেলের সঙ্গে দায়িত্বরত ইন্টার্নি চিকিৎসক নারজীস বাশারের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসকরা জোটবদ্ধভাবে মিছিল নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ফসিউর রহমানের কক্ষের দরজা ও জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে ও জরুরি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন ও বিক্ষোভ করেন।
আন্দোলনকারী ইন্টার্নি চিকিৎসকেরা আরো জানান, রাতেই ইন্টার্নি চিকিৎসকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন হাসপাতাল পরিচালকসহ বিএমএ নেতারা। দোষী রোগীর স্বজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালে পরিচালকের আশ্বাসে রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তালা খুলে দেওয়া হয়।
মমেক হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চন্দ্রপাল বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের পরিচালক মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে দোষী ওই রোগীর ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি কথা রাখেন নি।
যতক্ষণ পর্যন্ত ওই রোগীর ছেলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার রাতে প্রায় চার ঘণ্টা জরুরি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে রাখায় হাসপাতালে ভর্তিচ্ছু রোগীদের সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় এবং চিকিৎসার অভাবে শেরপুর থেকে আসা বিষ পান করা একজন রোগী মারা যায়।
এদিকে ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হাসপাতালের ফুঁসে উঠেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা। তারা মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অপরাধীর শাস্তির দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে কক্ষের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
মমেক হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, ইন্টার্নিদের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক পরিচালকের কক্ষ ভাঙচুরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফসিউর রহমান জানান, একাধিক বৈঠক হয়েছে। খুব শিগগির ইন্টার্নি চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩
সম্পাদনা: অনিক তরফদার/শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর