ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

কলাকে ‘কলা’ দেখানো নয়

কবির হোসেন, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৪
কলাকে ‘কলা’ দেখানো নয়

ঢাকা: কলা একটি অতি পরিচিত-বারমাসী ফল। কারণে-অকারণে অনেকেরই কলা খাওয়ার প্রতি অনীহা থাকতে পারে।

তবে নিশ্চিত করে বলা যায়, এ প্রতিবেদন পড়ার পর কলা সম্পর্কে পাঠকের ধারণাই পাল্টে যাবে।

কলার মধ্যে সাকরোস, ফ্রুটটোস এবং গ্লুকোজ-এই তিন প্রকারের প্রাকৃতিক সুগার রয়েছে। তার সঙ্গে ফাইবার তো রয়েছেই। কলা শক্তির আধার। একটি কলা শরীরের শক্তি সঞ্চারে যথেষ্ট সাহায্য করতে পারে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, দুটি কলা একসঙ্গে দেড়ঘণ্টা কাজের শক্তি যোগায়। অবাক হওয়ার কিছু নেই, অ্যাথলেটদের কাছে পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান ফল হলো কলা।

কিন্তু শুধু শক্তি যোগানের মধ্যে কলার গুণাগুণ সীমাবদ্ধ নয়। বহু রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে কলা।

হতাশা
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর মেন্টাল হেলথ (মাইন্ড) এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, হতাশায় ভুগছে এমন অনেকেই দীর্ঘদিন কলা খাওয়ার পর তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্যে এই গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। গবেষণায় বলা হয়, কলার মধ্যে ট্রাইটোফেন নামক এক প্রকার প্রোটিন রয়েছে যা বিষন্নতা দূর করতে সাহায্য করে।

রক্তশূন্যতা
কলায় উচ্চমাত্রায় আয়রন থাকে। এই আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের রক্তশূন্যতা দূর হয়। তাছাড়া কলায় অধিক মাত্রায় পটাসিয়াম থাকার কারণে ব্লাড প্রেসারও সহনীয় মাত্রায় নেমে আসে।

স্মৃতি শক্তি
এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, ইংল্যান্ডের টিকেনহাম স্কুলে দুইশ’ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করেছে কলা। এসব শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন সকালে নাস্তায় কলা খেত। গবেষকরা বলেন, পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য
ডাক্তাররা বলেন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। আর কলায় যেহেতু উচ্চমাত্রায় ফাইবার আছে সুতরাং কলা কোষ্ঠকানিঠ্য থেকে দূরে রাখে।

বুকের জ্বালাপোড়া (হার্ট-বার্ন)
কলা দেহে ৠান্টাসিড ইফেক্ট তৈরি করে। সুতরাং কেউ যদি হার্টবার্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে তাকে কলা খেতে হবে বেশি করে।

নার্ভস
কলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি থাকে। এটা নার্ভ সিস্টেমকে সচল রাখে। সেই সঙ্গে কলা স্থূলতা সমস্যা সমাধানে কিছুটা সাহায্য করে থাকে।

আলসার
পাকস্থলির নানা সমস্যা দূর করে কলা। কলাই একমাত্র ‘র ফ্রুট’ যা ক্রোনিকল সমস্যায় ভুলে নির্দ্বিধায় খাওয়া যায়। এসিডিটি দূর করে আলসার থেকে মুক্তি দান করে কলা।

তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
বিভিন্ন দেশে কলাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ঠাণ্ডা রাখার প্রতীক হিসেবে ‘কুলিং ফুড’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন; থাইল্যান্ডে গর্ভবতী মায়েরা কলা খান যাতে করে তাদের অনাগত সন্তান ঠাণ্ডা মেজাজের হয়। সুতরাং কলা খেতে হবে, দেহ-মেজাজ দু’টোই ঠাণ্ডা থাকবে।

এছাড়া, কলা হ্যাংওভার, মর্নি সিকনেস’র মতো বহুবিধ রোগের প্রাকৃতিক প্রতিষেধক। কলায় আপেলের চেয়ে চারগুণ বেশি প্রোটিন, দুইগুণ বেশি কার্বোহাইড্রেট, তিনগুণ বেশি ফসফরাস, পাঁচগুণ বেশি ভিটামিন এ ও আয়োডিন এবং দুইগুণ বেশি খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে। এছাড়া, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান পটাসিয়ামও রয়েছে কলায়।

সুতরাং বেশি করে কলা খেতে হবে, আর ইংরেজির বিখ্যাত প্রবাদটির সঙ্গে মুখ মেলাতে হবে, ‘এ ব্যানানা এ ডে কিপস দ্য ডক্তর অ্যাওয়ে’।

বাংলাদেশ সময়:  ২২১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।