বাড়ছে গরম। প্রচণ্ড তপ্ত আবহাওয়া মানুষের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে।
বড় পেঁয়াজ এই গ্রীস্মে হোক প্রতিটি খাবার আয়োজনের প্রধান অনুসঙ্গ, সে কথা বিশেষজ্ঞদের। পেঁয়াজের দাম কখনো চড়ে কখনো নামে। কিন্তু ক্রয়ক্ষমতার বাইরে খুব কমই যায়। গ্রীস্মে পেঁয়াজ খাওয়ার পরামর্শ তাই প্রত্যেকের জন্য। এই খাবার সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক ও শক্তি টিকিয়ে রাখতে সবচেয়ে উপযোগী বলেই চিহ্নিত করেছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। পেঁয়াজে এলিসিন নামের খাদ্য উপাদান থাকে যা মানব শরীরে চমৎকার একটি কাজ করে। খাবারের সঙ্গে যখনই আপনি পেঁয়াজ খাচ্ছেন তখন তা মস্তিষ্কে এক ধরনের বার্তা দিতে থাকে যা আপনাকে মাত্রাতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রাখে। আর যারা মেদ কিংবা চর্বির বিরুদ্ধে লড়াই করেও পারছেন না তাদের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দুপুরের খাবারে সালাদ হিসেবে পেঁয়াজ রাখুন।
মুক্তবাজার অর্থনীতির বিশ্বের যেখানেই যা কিছু ভালো তা এখন বাংলাদেশের বাজারেও যথেষ্ট পাওয়া যায়। লেটুস পাতার কথাই ধরুন না। অলিতে গলিতে সব্জিওয়ালার ঝুড়ির একপাশে লেটুস পাতা শোভা পায়। ভ্যানে করে মহল্লায় ঘুরে সব্জি ফেরি করেন যে বিক্রেতা তারাও লেটুস রাখেন, ফলে সাধারণের লাঞ্চ কিংবা ডিনার আয়োজনে দেখা যায় লেটুসের ব্যবহার। এই লেটুসকে গ্রীস্মের গরমে খাবারের তালিকায় বেছে নেওয়ার তাগীদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ‘ওজন কমানোর সবচেয়ে উপযোগী খাবার’ বলা হয় লেটুসকে। কারণ এতে রয়েছে আঁশ ও কোষ। এই আঁশ হজমের জন্য উপযোগী। আর যারা দীর্ঘস্থায়ীভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাদের জন্য খাবার হজম প্রক্রিয়া কার্যকর রাখা জরুরি। এছাড়া লেটুসের আঁশ পিত্তনালী থেকে নিসৃত পাচক রস সরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখে। আর এর অবধারিত সুফলটি হচ্ছে- যখনই ওই পাচক রস সরে যাবে তখন কলেস্টেরল কমবে।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ব্রোকলির কথা। ব্রোকলিকে অতি ঠাণ্ডা ও শান্ত একটি খাবার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গত শীতে যখন ফুলকপি, বাঁধাকপির ছড়াছড়ি তখন ফুলকপির আদলে গাঢ় সবুজ রঙ্গের ব্রোকলিও বেশ দেখা গেছে। ফুলকপি বাধাকপি এখন আর মিলছে না, কিন্তু ব্রোকলি এখনও শোভা পায় সব্জি বিক্রেতার ভ্যান কিংবা ঝুড়িতে। সব মৌসুমেই ব্রোকলি মিলবে। খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালোবাসুন কিংবা ঘৃণা করুণ ব্রোকলি আপনার শরীরের জন্য একটি মহান খাদ্য। উচ্চ আঁশযুক্ত একটি খাবার যা হজমে, কোষ্টকাঠিন্য প্রতিরোধে, রক্তে শর্করার পরিমান কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও ব্রোকলি আপনাকে বেশি খেয়ে ফেলার হাত থেকে রক্ষা করে।
অ্যাসপারাগাস। নাম শুনলেই ভাবনায় আসবে- এতো বিদেশি খাবার। অনেকেই বলবেন কোথায় মিলবে এই খাবার? কিন্তু গরমে যারা শক্তি ধরে রাখতে চান তারা ঢাকার ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে ঢুঁ মারলেই পেয়ে যাবেন অ্যাসপারাগাসের দেখা। বসন্তের শুরুতেই অ্যাসপারাগাসে ছেয়ে যায় বাজার। অনেকে আবার এও বলেন, বাজারে অ্যাসপারাগাস দেখেই বোঝা যায় বসন্ত এসেছে। ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় ব্যাপক চাষ ও ফলন হলেও এর বাজার বিশ্ব-বিস্তৃত। ফলে বাংলাদেশেও পাওয়া যাবে অ্যাসপারাগাস। খাদ্যগুনের কথা বিবেচনায় নিলে সামান্য খুঁজে বের করার ঝক্কি নিতেও রাজি থাকবেন অনেকেই। খাদ্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যাসপারাগাস হচ্ছে আঁশ ও আমিষ দুটোরই একটি ভালো উৎস। শরীরের রোগ প্রতিরোধ এবং হজমশক্তির জন্য এক উপযোগী খাবার। এছাড়াও ইনুলিন নামে এক ধরনের খাদ্যগুন রয়েছে অ্যাসপারাগাসে যা মলদ্বারের কাছাকাছি পৌঁছার আগে পর্যন্ত হজম হয় না। সেখানে পৌঁছেই এই ইনুলিন খাবারের পুষ্টিগুনটি শরীরে সঠিকভাবে মিশে যেতে সহায়তা করে।
এই প্রচ- গরমে এসব খাবার ধর্মপালনের মতো গুরুত্ব দিয়েই খেতে বলেছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। আর তা সম্ভব হলে এর গুনাগুন প্রত্যেককেই বিষ্ময়কর ফল দেবে বলেই মত তাদের।
বাংলাদেশ সময় ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৪