খুলনা: খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আবাসিক হলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা. ইউনুসুজ্জামান তারিমের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ।
ঘটনার দুই দিন অতিবাহিত হলেও মামলা না নেওয়ায় ডা. ইউনুসুজ্জামান তারিম, তার পরিবার ও চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ডা. তারিমের আত্মীয় স্বজনরা বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ছাত্রাবাসে অবস্থানরত একজন সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করতে যান তারিম। সেখানে যাওয়া মাত্রই ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তার উপরে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় তারিমের মাথা, বুক, পিঠে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং কব্জি ভেঙে যায়। পরে তাকে আহত অবস্থায় খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। আবারও হামলা হতে পারে এ আশংকায় তাকে বুধবার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর তারা নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
ডা. তারিমের পরিবারের অভিযোগ, খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব মামলা না নেওয়ার জন্য আগে থেকে বলে রাখায় পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
তাদের অভিযোগ, হামলাকারী আসিফ ও আপেলের পক্ষ নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করছেন খুমেক অধ্যক্ষ।
এছাড়া, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদে জেলা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বিভিন্ন সময় যে কোনো চিকিৎসকের ওপর মামলা হলে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা ও পালন করেন। কিন্তু ডা. তারিমের উপর হামলার পর তার নীরবতা অনেক চিকিৎসক সন্দেহের চোখে দেখছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডা. তারিমের সঙ্গে বাংলানিউজের কথা হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতা আসিফ ও আপেলের নেতৃত্বে ১০-১২ জন এ হামলা চালিয়েছে। তারা আমাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে গেছে। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করা হবে।
এ সময় ডা. তারিম তার শরীরের ক্ষত স্থানগুলো দেখান এবং প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহম্মেদ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা ৪৯ মিনিটে বাংলানিউজকে বলেন, ডা. তারিমের আত্মীয় স্বজনরা মামলার জন্য এসেছিলেন। মামলা নেইনি।
এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদে জেলা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমের সঙ্গে মোবাইলে বার বার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৪