ঢাকা: ধূমপান করলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে-এমন ধারণা থেকে অনেকে ধূমপান করে থাকেন। কিন্তু এমন ধারণা পোষণকারীদের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের উতাহ অঙ্গরাজ্যের ব্রিংহাম ইয়াং ইউনিভার্সিটি পরিচালিত গবেষণায় বলা হয়, ধূমপান আসলে ওজন বাড়ায়, কমায় না। ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় রকমের ধূমপানই দায়ী।
গবেষণা শেষে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ধূমপানে কেবল হৃদরোগের ঝুঁকিই বাড়ে না, স্থূলতাসহ শরীরের অন্য রোগের প্রবণতাও বেড়ে যায়।
ব্রিঘাম ইয়াং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও গবেষণা দলের প্রধান বেঞ্জামিন বিকম্যান বলেন, পরোক্ষ ধূমপানে চার হাজারের বেশি কেমিকেল মনুষ্যদেহে প্রবেশ করে, যেসবের কোনো কোনোটি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী।
গবেষণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক এবং শতকরা ২০ ভাগ শিশু পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। আর, যুক্তরাজ্যে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ফুসফুসের রোগ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টটিভ পালমোনারি ডিজিজে (সিওপিডি) আক্রান্ত প্রতিবছর ১২ হাজার মানুষ মারা যায়।
অধ্যাপক বিকম্যান ও তার গবেষণা সহযোগী পল রেনল্ড জানান, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ধূমপান শরীরে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স হিসেবে কেন কাজ করে-যার জন্য ওজন বেড়ে যায়-তা সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করেছেন তারা।
গবেষণায় ইঁদুরদের পরোক্ষ ধূমপানে অভ্যস্ত করানোর পর সেগুলোর কোষের স্তর পরীক্ষা করে দেখা যায়, কোষের কাঠামো ও কার্যক্রমে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ধূমপানের কারণে মূলত ইঁদুরের কোষে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায়।
গবেষকরা জানান, কোনো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে এলে শরীর অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরি করতে শুরু করে। ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়।
গবেষণায় শেষ পর্যায়ে ইঁদুরগুলোকে পরোক্ষ ধূমপান থেকে সরিয়ে ডায়েট প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা হলে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে তারা।
গবেষকরা জানান, পরোক্ষ ধূমপায়ীদের কিছু চিকিৎসা সেবা দেওয়া যেতে পারে। তবে, প্রত্যক্ষ ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে বর্জনের পরামর্শ ছাড়া কোনো বিকল্প পথ বাতলানো যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৪