ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

পাটগ্রামে সিলোকোসিস রোগে আক্রান্ত শ্রমিকের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৪
পাটগ্রামে সিলোকোসিস রোগে আক্রান্ত শ্রমিকের মৃত্যু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে সিলোকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে নুরুজ্জামান আহম্মেদ (৩৫) নামে আরো এক পাথর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

এই নিয়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪০ জনের মৃত্যু হলো।



সোমবার (২৪ নভেম্বর) দিনগত গভীররাতে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।

মৃত পাথর শ্রমিক নুরুজ্জামান আহম্মেদ উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা বামনদল এলাকার সেরাজ উদ্দিনের ছেলে।

মৃতের স্বজনরা বাংলানিউজকে জানান, নুরুজ্জামান দীর্ঘদিন বুড়িমারীতে অবস্থিত ঢাকার ভিক্টরি মোজাইক নামে একটি পাথর কারখানায় দৈনিক ১শ’ টাকা মজুরির বিনিময়ে পাথর ক্রাসিংয়ের কাজ করতেন। সেখানে প্রায় তিন বছর ধরে এ কাজ করেছেন তিনি।


জানা যায়, পাথর ক্রাসিংয়ের সময় উড়ন্ত ধূলা নাক-মুখ দিয়ে শরীরে ঢুকে তার সিলোকোসিস রোগ হয়। পরে আস্তে আস্তে তিনি অসুস্থ বোধ করলে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হননি।

ঢাকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) নামে একটি সংগঠন এসব রোগীকে সনাক্ত করার সময় নুরুজ্জামানকেও ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। বিলস নুরুজ্জামানকে ঢাকা জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করান।

সেখানে ১৫ দিন চিকিৎসা চলার পরও নুরুজ্জামানের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে সোমবার তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। ওই দিনই রাত ১টায় দিকে তার মৃত্যু হয়।

মৃত নুরুজ্জামানের সহকর্মী পাথর শ্রমিক মোমিন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, পাথর ভাঙার কাজ করলে মজুরি বেশি, তাই অভাবের সংসারে অর্থ যোগাতেই পাথর কারখানায় কাজ করেন তারা। তবে নুরুজ্জামানের মৃত্যুটা তার কাছে অত্যন্ত বেদনার।

শুধু মোমিনই নয়, এরকম অনেক শ্রমিক রয়েছেন যারা এ মৃত্যুর ভয়ে পাথর কারখানায় কাজ ছাড়তে চান, তবে নতুন কর্মস্থল নিয়ে সংশয় তাদের।

এ রোগে নুরুজ্জামানসহ এ পর্যন্ত মোট ৪০ জনের মৃত্যু হলেও থেমে নেই পাথর ভাঙার কাজ। এখনও পুরো পাটগ্রাম উপজেলা জুড়ে প্রকাশ্যে রাস্তার পাশেই চলছে পাথর উত্তোলন ও ভাঙার কাজ। পাথর শ্রমিকদের মুখে মার্কস ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

এছাড়াও সড়ক-মহাসড়কের পাশে এভাবে পাথর ভাঙতে এবং পাথর পরিস্কার করতে পাথরের ধূলোবালি পথচারীদেরও ক্ষতি করছে। ফলে এ অঞ্চলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ রোগের প্রাদুর্ভাব।  

চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠানো দুলাল মিয়া নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।