দীর্ঘ দুমাস শীতের পর আসে কাঙ্খিত বসন্ত। উলের ভারি জামাকাপড়কে বিদায় জানিয়ে সোনালি রোদে চড়ে বেড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু অনেকে আক্রান্ত হন নানা রোগব্যাধিতে।
আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী শীতকালে সর্বনিম্ন ৭ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে থাকে। ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে শরীর অনেক সময় খাপ খাওয়াতে পারে না। এছাড়াও এ সময়ে বাতাসে প্রচুর পরিমানে অ্যালার্জি থাকে, ফলে সেগুলো শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে জ্বর, সর্দি-কাশি, হাঁচি ও চুলকানির সৃষ্টি করে।
শীতের পর এই সময়টাতে ছুটি কাটাতে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যায়। একই জায়গায় বিভিন্ন শ্রেণীর ও রোগ বহনকারী ব্যক্তি জড়ো হয় বলে সহজেই রোগের বিস্তার ঘটে। অনেকেই আক্রান্ত হন সংক্রামক রোগে। বসন্তে নানা রকম ফুলও ফোটে। এসব ফুলের মাধ্যমেও অ্যালার্জি ছড়ায়। অ্যালার্জির কারণে অনেকের মাথাব্যথা, চোখে চুলকানি, শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা দেখা দেয়। এগুলো ঋতু পরিবর্তনের ফলে শরীরের দেখা দেওয়া স্বাভাবিক উপসর্গ।
অ্যালার্জি
চোখ ও নাক চুলকানো, গলায় খড়খড়ে ভাব ও হালকা মাথাব্যথা অ্যালার্জির লক্ষণ। অ্যালার্জি বেশি পরিমাণে হলে শরীর ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ সময়ে তিতা খাবার যেমন নিম পাতার রস, চিরতা ও করলা খাওয়া উচিত। গোসলের সময় পানিতে নিমপাতা সেদ্ধ করে ওই পানি দিয়ে গোসল করলে উপকার পাওয়া যায়। প্রয়োজনবোধে বিশেষজ্ঞদের সরণাপন্ন হোন।
ফ্লু
এসময়ে বাতাসে জীবাণুর মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে ফ্লু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জ্বর, ব্যথা ও শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া এর সাধারণ উপসর্গ। ফ্লু হলে প্রচুর লিকুইড খাবার খাওয়া উচিত। প্রচুর পরিমাণ পানি, ফলের রস ও স্যুপ খেতে পারেন। তবে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় নেওয়া উচিত নয়।
সাইনোসাইটিস
সাইনোসাইটিসের কারণে কপাল, ভ্রুর নিচের অংশ, নাকের আশেপাশে ও মুখমণ্ডলের একপাশে ব্যথা হয়। ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া গরম পানিতে মেনথল দিয়ে দিনে দু’বার ভ্যাপার নিলে উপকার পাওয়া যায়।
তাই বলে রোগবালাইয়ের ভয়ে বসন্তে নিজেকে গুটিয়ে ফেলা তো যাবে না। সচেতন হতে হবে এবং তা হওয়া সম্ভব খুব সহজেই। তাই মেনে চলুন কিছু টিপস—
১. বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরিধান করুন।
২. বাড়ি ফিরে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করুন।
৩. নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করুন ও নাক পরিষ্কার রাখুন।
৪. বিছানার চাদর নিয়মিত গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
৫. মাঝে মাঝে ঘরের জানালা খুলে দিন। এতে ঘরে রোদ প্রবেশ করায় ফাঙ্গাস জমতে পারবে না।
৬. স্নানঘর পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
৭. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৫