ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মৃত্যুর ৪ বছর পরে মেয়ের সন্তান মায়ের গর্ভে!

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫
মৃত্যুর ৪ বছর পরে মেয়ের সন্তান মায়ের গর্ভে!

ব্রিটেনের এক নারীর মৃত্যুর চার বছর পরে জন্ম নিতে যাচ্ছে তার সন্তান! এই সন্তান বড় হয়ে উঠবে মৃত সেই নারীর নিজের মায়ের গর্ভে।

ঘটনাটি সহজ নয়।

কিন্তু মৃত মেয়ের এই শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে ‍আইনি লড়াই লড়ে যাচ্ছেন ৫৯ বছর বয়সের এক ব্রিটিশ নারী। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে নিজের ডিম্বাশয় সংরক্ষণ করেছিলো তার মেয়ে। ইচ্ছা ছিলো ভালো হয়ে উঠলে এই ডিম্বাশয়ে ডোনারের শুক্রানু নিয়ে বাচ্চা প্রসব করে মা হওয়ার সাধ মেটাবেন। প্রকৃতি তার সেই ইচ্ছা পূরণ করেনি। কিন্তু এবার নাছোর বান্দা হয়েছেন তা মা। তিনি বলেছেন, মেয়ের সংরক্ষিত ডিম্বানু নিজের গর্ভে ধারণ করতে চান। আর ডোনার শুক্রানুতে তাতেই আসবে মেয়ের সন্তান, নিজের নাতি ‍বা নাতনী।

সম্ভব হলে সেটিই হবে বিশ্বের প্রথম এমন ঘটনা। ৫৯ বছরের ওই বৃদ্ধা ও স্বামী দুজনই এতে রাজি। তারা বলছেন, এটি তাদের মেয়ের শেষ ইচ্ছা আর তারা তা পূরণ করতে চান। তারা মনে করেন তাদের একমাত্র মেয়েটিকে হারিয়েছেন। এখন এই একটি মাত্র উপায়েই তারা নানা-নানী হতে পারবেন।

চার বছর আগে বোয়েল ক্যান্সারে ২৬ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাদের মেয়েটির।

ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর মেয়েটি তার ডিম্বানু হিমায়িত করে রাখে, ভবিষ্যতে মা হওয়ার ইচ্ছায়। কিন্তু রোগের সঙ্গে সংগ্রামে তার হার হয়।

এদিকে যুক্তরাজ্যের কোনও ক্লিনিকই এই চিকিৎসা দিতে রাজি হচ্ছে না। এতে ওই বাবা-মা তাদের মেয়ের হিমায়িত ডিম্বানু নিয়ে যেতে চান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে নিউইয়র্ক প্রায় লাখ খানেক ডলার খরচ করে তারা মেয়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে পারবেন।

তবে, ৫৯ বছরের এই নারীর পক্ষে ওই ডিম্বানুতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ বলে জানিয়েছে ক্লিনিকগুলো। তারা বলছে, এতে তার বড় ধরনের শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। আর গর্ভধারণ হলেও সম্ভাব্য শিশুটিরও হতে পারে বড় কোনও শারীরিক সমস্যা।

সেটি অবশ্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিষয়। আপাতত এই দম্পতিকে লড়তে হচ্ছে আইনি লড়াই। বিচারক তাদের পক্ষে রায় দিলে, এই নারীই হবেন বিশ্বের প্রথম যিনি তারা মৃত মেয়ের ডিম্বানু থেকে সন্তান ধারন করবেন।

যুক্তরাজ্যের হিউম্যান ফার্টিলিটি অ্যান্ড এমব্রোয়োলজি অথরিটি (এইচএফইএ) অবশ্য এরই মধ্যে ডিম্বানু যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে মৃত মেয়েটি কোনও স্পষ্ট লিখিত নির্দেশনা দিয়ে যায়নি, এটাই তাদের যুক্তি।

তবে তারা বাবা-মা এবার উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন। তাদের দাবি মেয়েটি মৃত্যুর আগে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে গেছে।

এদিকে, রাজনীতিক আর সামাজিক গোষ্ঠীগুলোও বিষয়টি সহজভাবে নিচ্ছে না। মৃত্যুর চার বছর পরে কোনও নারীর সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না বলে মত তাদের।

নারীদের মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পর ডোনার শুক্রানুতে গর্ভধারণ অসম্ভব এমনটা নয়। তবে এতে গর্ভপাত ও গর্ভজনিত অন্য কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
তারপরেও বৃদ্ধ দম্পতি তাদের লড়াই লড়ে যাচ্ছেন। তবে এখনই ত‍ারা সংবাদমাধ্যমে তাদের নাম প্রকাশিত হোক সেটা চাইছেন না।

বাংলাদেশ সময় ০৯১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।