ঢাকা: দেশে পপুলেশন বেজড ক্যানসার রেজিস্ট্রি না থাকায় রোগীর প্রকৃত পরিসংখ্যান সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কাছে নেই বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ক্যানসার নির্ণয় ও চিকিৎসা : সুযোগ ও ব্যয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ অভিযোগ ওঠে।
সেন্টার ফর ক্যানসার প্রিভেনশন রিসার্চ (সিসিপিআর), পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও এইচআরডি ক্যানসার সাপোর্ট যৌথভাবে এর আয়োজন করে।
সিসিপিআর প্রধান উপদেষ্টা ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, বাংলাদেশে ক্যানসার রোগীর প্রকৃত পরিসংখ্যান নিরূপণে পপুলেশন বেজড রেজিস্ট্রি নেই। ফলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করতে হয়। যা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় না বলে আমাদের ধারণা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ক্যানসার রোগীর তুলনায় চিকিৎসা এখনো অপ্রতুল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেরিতে ক্যানসার শনাক্ত হওয়ায় চিকিৎসায় ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিত্যালয়ের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা বলেন, ক্যানসার নিরাময় কেন্দ্র উপজেলা হাসপাতালেও রয়েছে। প্রচারণার অভাবে দেশের মানুষ ক্যানসার সচেতনতায় এগিয়ে আসছে না। তবে কেন্দ্র যেখানে রয়েছে সেখানের মানুষের মধ্যে সচেতনতা এসেছে।
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. খুরশিদ আলম বলেন, সচেতনতা আর ভ্রান্ত ধারণা দূর করা ছাড়া ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, শুধু খাদ্যাভাস পরিবর্তন করলে এক তৃতীয়াংশ ক্যানসার প্রতিরোধ হয়। তবে চিকিৎসা ব্যয় না কমায় এ চিকিৎসা সব মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফাতেমা আশরাফ বলেন, আমাদের দেশে জরায়ু আর ব্রেস্ট ক্যানসার রোগী বেশি। এসব রোগী ক্রমবর্ধমান হওয়ার ক্ষেত্রে অল্প বয়সে বিয়ে, সন্তান লাভ, বারবার সন্তান নেওয়া, অবাধ যৌন মিলন, তামাক গ্রহণ বেশি দায়ী।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, রোগীর চিকিৎসায় পারিবারিক ও সরকারিভাবে তহবিল গঠন করা যেতে পারে। শহরের বাইরের একজন রোগীর শহরে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয় না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা অপ্রতুল। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খরচ বেশি। সেক্ষেত্রে সরকার প্রতিটি জেলায় একটি করে ক্যানসার সেন্টার খোলা, চিকিৎসা ব্যয় কমাতে ক্যানসারের ওষুধে সাবসিডি দেওয়া, বেড ব্যয় ৮০ শতাংশ কমাতে পারে।
বৈঠক সঞ্চালনা করেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৫