ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে ৯৫ শতাংশ সফলতা বান্দরবানে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৫
যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে ৯৫ শতাংশ সফলতা বান্দরবানে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘একজন যক্ষ্মা রোগী সুস্থ হয়ে যখন আমার জন্য দোয়া করে, তখন বিগত দিনের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। মনটা খুশিতে ভরে ওঠে।

এই অসুস্থ মানুষটাই একদিন কাজ করতে পারতো না। সারাদিন বাড়িতে শুয়ে থাকতো। আমাদের সেবায় ওই রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাচ্ছে। এর চেয়ে খুশি আর কিছু নেই। ’
 
কথাগুলো বলছিলেন বান্দরবান সদর উপজেলার কাশেম পাড়ার সেনোয়ারা বেগম। সেনোয়ারা এর একজন স্বাস্থ্যকর্মী। বান্দরবান জেলায় সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে ব্র্যাক ‘জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি’তে কাজ চলছে। আর এ কর্মসূচির আওতায় কাজ করে থাকেন সেনোয়ারা।

প্রায় ১০ বছর ধরে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। দুই ছেলে এক মেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে সেনোয়ারার সংসার। সংসার ও ছেলে-মেয়ের দেখভাল করেও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন তিনি। এ পর্যন্ত অনেক যক্ষ্মা রোগীকে চিকিৎসা করেছেন। অনেক মানুষের মুখে তার এই স্বাস্থ্য সেবার প্রশংসা পেয়েছেন।  

এই উপজেলারই শেরেবাংলা গ্রামের আখিঁ আকতারও গত সাত বছর ধরে কাজ করছেন স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে। আঁখি বলেন, ‘ইচ্ছে ছিল আমার বড় হয়ে ভালো কিছু করবো। ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। এরপর বিয়ে হয়ে যায়। তাই ভেবেছিলাম আমার স্বপ্ন আর কখনোই পূরণ হবে না। শেষ পর্যন্ত যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের জন্য কিছু করতে পেরে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ’

স্বামী-সংসার ও সন্তানদের দেখভাল করে বাকিটা সময় ব্যয় করেন মানুষের সেবার কাজে।

সেনোয়ার, আঁখিদের মতো স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বান্দরবানে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে। বান্দরবান জেলায় যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত ও তাদের সুস্থ করার ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ সফলতা দেখিয়েছে সরকারের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে ৪১৫ জন যক্ষ্মা রোগীকে শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে ২৯২ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। চিকিৎসা শেষ করা হয়েছে ১০১ জনের। মারা গিয়েছেন ১৪ জন। ২০১৪ সালে ৯৬ জন রোগীর মধ্যে ৬৯ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। চিকিৎসা সম্পন্ন করা হয়েছে ২২ জনের। মারা গিয়েছেন ৪ জন।

যক্ষ্মা কর্মসূচির কাজে সফল হলেও জাতিসংঘের সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে (এমডিজি) ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।

এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শতভাগ সফলতা পেতে কোনো সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে জাতীয় যক্ষ্মা কর্মসূচিতে ব্র্য্যাকের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শায়লা ইসলাম বলেন, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের কাজের অগ্রগতি খুবই ভালো। তবে, এরপরেও জাতিসংঘের সবগুলো নির্দেশক অনুযায়ী সফলতা দেখাতে হবে। এ বছর কাজ শেষেই আমরা আগামী বছর সেই প্রতিবেদন হাতে পাবো। এরপরে জানা যাবে ওই লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছি। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ০০০৩ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৫
আইএইচ/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।