ঢাকা: তামাক জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার পরিহার করে অনেক দেশে হেড নেক ক্যানসারের হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, ক্যানসারের অন্যতম কারণ, শাক-সবজি সমৃদ্ধ খাবার ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।
বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) পালিত হয়েছে বিশ্ব হেড-নেক ক্যানসার দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষ করে নাক, কান ও গলার ক্যানসার প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি অত্যন্ত জরুরি। তামাক সেবন, ধূমপান, মদ্যপান, অতিরক্তি মসলাযুক্ত খাবার, প্রিজারভেটিভ ফুড পরিহার করার মাধ্যমে এ ধরনের ক্যানসার অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়। শুরুতে চিহ্নিত হলে এ ক্যানসার নিরাময়যোগ্য।
তিনি বলেন, তবে সমাজে জঙ্গিবাদ, আগুন সন্ত্রাসের ক্যানসার নিরাময়ের একটাই উপায়। তা হলো এগুলো নির্মূল করা বা ধ্বংস করা। এক্ষেত্রে মাঝামাঝি কোনো জায়গা, আপসের সুযোগ নেই। যারা সমাজে জঙ্গিবাদ, আগুন সন্ত্রাসকে আশ্রয় দেয় তাদেরও নির্মূলের বিকল্প নেই। এ ক্যানসার নির্মূলে প্রয়োজন অস্ত্রোপচার। যে কাজে আমি ব্যস্ত রয়েছি, আমি যেনো এটা সফলভাবে করতে পারি।
বিশ্ব হেড-নেক ক্যানসার দিবস-২০১৫ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডি ব্লকের ১১ তলায় ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিনের আইএনএম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বিএমডিসির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আবু সফি আহমেদ আমিন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।
সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাক-কান ও গলা বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব হেড-নেক সার্জনসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. খোরশেদ আলম মজুমদার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর নাক, কান, গলা বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. মোসলেহ উদ্দিন।
এর আগে সকাল ৯টায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে।
হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, গণমুখী ও সমন্বিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিদিন ৩০ লাখ রোগী চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শসেবা গ্রহণ করেছেন। ৭ হাজার রোগীর অস্ত্রোপচার হচ্ছে। এটা বিরাট ব্যাপার।
ক্যানসার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপির সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং সচেতনতা সৃষ্টিতে আরও উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ক্যানসার প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বে ক্যানসার ভয়ঙ্করভাবে বাড়ছে। তাই এটা প্রতিরোধে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন। ক্ষুধামন্দা, রক্ত শূন্যতা, অবসাদ ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ। এরকম হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা সন্তোষজনক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে।
এসময় মন্ত্রী রাজনৈতিক নেতাদের বিদেশে না গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৫
এমএন/এএ