ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্যকর খাবার রান্নার সঠিক পদ্ধতি

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৫
স্বাস্থ্যকর খাবার রান্নার সঠিক পদ্ধতি

ঢাকা: আপনি যা খাচ্ছেন তা-ই শুধু আপনার স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না, বরং খাবার কী উপায়ে রান্না করছেন তারও রয়েছে প্রভাব। ভিন্ন ভিন্ন খাবারের জন্য রান্নার কোন পদ্ধতিটি সঠিক তা জানাও জরুরি।



ডায়েটেশিয়ান সোফি ক্ল্যাসেনস জানিয়েছেন স্বাস্থ্যপোযোগী কয়েকটি ভিন্ন রান্নার পদ্ধতি সম্পর্কে। জেনে নেওয়া যাক সেগুলো।
 
খাবার কতটা পুষ্টিকর হবে তা অনেকটাই নির্ভর করে কী উপায়ে তা রান্না করছেন। রান্নার আগে এটি মাথায় রাখতে হবে, খাবারের ভিটামিন, খনিজ ও অন্য পুষ্টি উপাদান যেন অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে। তবে মাংসে হয়তো এ উপাদানগুলো পুরোপুরি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। তবে প্লেটে বাড়তি পুষ্টি তো যোগ করা যেতেই পারে।
 

খাবারে বাড়তি পুষ্টি
সবজি কুরানি দিয়ে গাজর, ধুন্দুল, শসা, আপেল পাস্তা ও সালাদের উপর ছড়িয়ে দিন। এন্টি অক্সিডেন্ট যোগ করতে চাইলে দিন লাল পেঁয়াজের ফালি। শাকে গোলমরিচ গুঁড়া ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে খেতে পারেন। জলখাবার হিসেবে এটি মন্দ নয়। টমেটো কাঁচা খাওয়ার চেয়ে রান্না করে খাওয়া বেশি উপকারী। কারণ উচ্চ তাপমাত্রায় টমেটোর কোষ ভেঙে গেলে পুষ্টি উপাদান বের হতে থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি রোস্ট করে খেতে পারেন।

পানিতে রান্না করুন
পানিতে সিদ্ধ করে খাবার তৈরি সাধারণ একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু বেশি সিদ্ধ হলে বা নরম হলে পানিতে সব পুষ্টি চলে যায়। তবে সিদ্ধ করার সময় পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রেখে রান্না করা সম্ভব।


সিদ্ধ
মূলজাতীয় সবজি যেমন আলু ও বিট যা রান্না হতে অনেক সময় লাগে এছাড়াও ছোলার ডাল ও মটরশুটি সিদ্ধ করা যেতে পারে। তবে নরম জাতীয় সবজি যেমন ব্রোকোলি, শতমূলী ও শিম থেকে খাদ্য উপাদান পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। খোসাযুক্ত সবজি, যেমন মটরডাল ও ভুট্টা ভালোভাবে সিদ্ধ করা যেতে পারে।

নতুন ছোট আলু ১০ থেকে ১৫ মিনিট পানিতে সিদ্ধ করুন। নামানোর তিন মিনিট আগে কিছু ডাল ছেড়ে দিন। মাছ বা সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

বিটের মাথা ও নিচের অংশ কেটে খোসাসহ পানিতে নরম হওয়া পর্যন্ত ৩০-৪০ মিনিট সিদ্ধ কর‍ুন। ঠাণ্ডা হওয়ার পর সালাদ ও আলুর সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন।  

ছোলার ডাল সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ধুয়ে দশ মিনিট মিদ্ধ করে নরম হওয়া পর্যন্ত ২০ থেকে ৪০ মিনিট অল্পজ্বালে চুলায় রেখে দিন।


ব্লাঞ্চিং
ব্লাঞ্চিংয়ের প্রক্রিয়াটি সিদ্ধ করার মতোই। তবে এক্ষেত্রে বেশি তাপমাত্রা সবজি দ্রুত সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে ফেলা হয় যাতে পুষ্টি, রং ও বুনন ঠিক থাকে।
শাক-লতাপাতা ও শালুক ব্লাঞ্চিংয়ের জন্য ভালো। মরিচ ও টমেটো ব্লাঞ্চিং করলে তা ছিলতে সুবিধা হয়।
 

ভাপে রান্না

নরম সবজি যেমন ব্রোকেলি, ফুলকপি ও শতমূলীর নিজের রসে খাবার স্টিম করবেন না। এতে ভিটামিন অপচয় হয়। গাজর সিদ্ধ করার চেয়ে স্টিম করলে এর স্বাদ বাড়ে। সাদা মাছ স্টিম করলে এর স্তর ঠিক থাকে ও সুস্বাদু হয়।


পোচিং
সিদ্ধর মতোই তবে উচ্চ তাপের পরিবর্তে অল্পতাপে খাবার রান্না করা। মাছ পোচ করার সময় ফ্লেভার হিসেবে পানি বা দুধ দিতে পারেন।

ফ্রাইপ্যানে ফুটন্ত পানিতে ডিম ভেঙে দিন। তাড়াতাড়ি চুলা বন্ধ করে দিন। তিন থেকে পাঁচ মিনিট রাখুন। কড়াইয়ে পালং শাক নেড়ে নামিয়ে ফেলুন। সাদা মাছ যেমন, বোয়াল জাতীয় মাছ দুধে ৪-৬ মিনিট কালো মরিচ, পার্সলে ও পেঁয়াজ দিয়ে রান্না করুন। চাইলে হোয়াইট সস ব্যবহার করতে পারেন। পোচের সময় নিশ্চিত থাকুন যেন সসপ্যানের ঢাকনা ভালোভাবে বন্ধ থাকে।

তেলে রান্না
বেশি ভ‍াজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যদিও কিছু তেল শরীরের পক্ষে ভালো। যেমন, মনো আনস্যাচুরেটেড ও অলিভ অয়েল।

সট
এক চা চামচ অলিভ অয়েল পাত্রে ঢালুন। এবার তেলে রসুন কুচি দিন ও ১/৪ কাপ মাশরুম দিন। মাশরুম বাদামি হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ভালোভাবে নাড়ুন।


স্টিয়ার ফ্রাই
বেশি জ্বালে দ্রুত রান্না এবং রং ও গন্ধ ঠিক রাখা। বাদাম তেল ও তিলের তেল। ১-২ টেবিল চামচ তিলের তেলে চিংড়ি দিন। সঙ্গে আদা, মরিচ ও রসুন কুচি দিন। চাইলে সবজিও দিতে পারেন। সয়াসস সহ রাইস নুডুলসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।


রোস্টিং
এটি মাংস রান্নার ভালো পদ্ধতি। মাছ রান্নার সময় তা ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়ে রান্না করুন। মাংস, সবজি ও অন্য উপাদান ৪০-৬০ মিনিট ওভেনে রাখুন। মাছ ফয়েল পেপারে নিয়ে লেবুর রস,  আলু ও বিট দিতে পারেন। ধুন্দুল, বেগ‍ুন, মরিচ ও টমেটোও ব্যবহার করা যেতে পারে।


গ্রিলিং
গ্রিলিং মাংস থেকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমায়। ও মাংসকে শুষ্ক করে। তবে খেয়াল রাখুন, যে রান্নার পদ্ধতি আপনি ব্যবহার করছেন তা যেন সর্বোচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ ও স্বাস্থপোযোগী হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৫
এসএমএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।