ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

অসংক্রামক রোগ

বাড়াতে হবে সচেতনতা-জীবনমান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫
বাড়াতে হবে সচেতনতা-জীবনমান ছবি: রাজীব/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিশ্বে প্রতি বছর ১৬ মিলিয়ন মানুষ অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এর পেছনে উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিক, অ্যাজমা, হাঁপানি, উচ্চ রক্তচাপসহ এসব অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে নি:স্ব হচ্ছে ব্যক্তি, পরিবার।
 
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে এসব রোগের হার বেশি। প্রতি বছর এ অঞ্চলের দেশগুলোতে ৪৫ লাখ লোক দরিদ্র হচ্ছেন এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে।  
 
চিকিৎসা ব্যয় কমানোর পাশাপাশি কায়িক পরিশ্রম, খাদ্যাভ্যাস, সঠিক জীবনযাপন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এসব অসংক্রামক রোগকে প্রতিরোধ করতে হবে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে গণমাধ্যম বা সংবাদ মাধ্যম।
 
রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘এনসিডি’স ইন বাংলাদেশ: প্রসপেক্টস ইন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ বক্তারা এসব কথা বলেন। সেক্রেটারিয়েট এনসিডি’স ফোরাম এ সেমিনারের আয়োজন করে।
 
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. আফম রুহুল হক।  
 
সেমিনারে তিনি বলেন, ব্যক্তি-পরিবার, সমাজ জীবনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রোগের ধরনেরও পরিবর্তন হচ্ছে। খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনের খুব একটা পরিবর্তন না হলেও দেশের চিকিৎসা ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তবে এসব অসংক্রামক রোগকে প্রতিরোধ করতে হলে সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
 
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে এসব অসংক্রামক রোগের হার সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবনমানের পরিবর্তন না হলে খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাপনেরও পরিবর্তন হবে না। সামগ্রিকভাবে এখন আমরা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে বলেই আমরা এ পর্যায়ে নিজেদের উন্নীত করতে পেরেছি।
 
তিনি বলেন, আমাদের সবকিছু নিয়ে এগোতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। দেশের ২৭ শতাংশ লোক আজ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। এর পরিধি আরও বাড়াতে হবে।
 
সাবেক এ মন্ত্রী অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।     
 
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ডা. রশিদ-ই-মাহবুব। শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ‘এনিমিস’র সমন্বয়ক ডা. হামিদা খাতুন।
 
সেমিনারে বক্তারা বতর্মানে বিশ্বব্যাপী অসংক্রামক রোগ একবিংশ শতাব্দীর উন্নয়নের অন্যতম বাধা। শুধু তাই নয়, এসব অসংক্রামক রোগ উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ।
 
ক্রমবর্ধমান এই রোগগুলো নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ, এ রোগগুলোর চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল।
 
সেমিনারে বক্তারা এসব অসংক্রামক রোগের জন্য তামাক, অ্যালকোহলের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং খাদ্যাভ্যাসকেই দায়ী করেছেন।
 
বক্তারা আরও বলেন, কেবল খাদ্য বা খাদ্যাভ্যাসই নয়, স্থূলতার কারণেও এসব রোগের বিস্তার ঘটছে। বিশেষ করে শহরের স্কুল-কলেজগুলোতে এখন খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। খেলার মাঠ না থাকায় শরীরচর্চাও নেই। ফলে শিশুদের মাঝে স্থূলতা বাড়ছে। আর এ স্থূল স্বাস্থ্যই এক সময় ডেকে আনছে ডায়াবেটিক, হৃদরোগের মতো অসংক্রামক রোগ।
 
বক্তারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক সমতা এবং পরিবেশ রক্ষাসহ সমাজ-রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে সমন্বয় করে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের আহ্বান জানান।
 
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য  ডা. মোহাম্মদ হাবিব-ই মিল্লাত, ডা. শামীম হায়দার তালুকদার, প্রফেসর এনায়েত হুসাইন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৫
এমএইচপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।