বরগুনা: ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতাই পারে নারীদের প্রসবজনিত রোগ ফিস্টুলা নিয়ন্ত্রণ করতে। বরগুনা আরডিএফ মিলনায়তনে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে এক অ্যাডভোকেসি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরগুনা জেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউএনএফপিএ ও বিডব্লিউএইচসি এ সভা আয়োজন করে। সভায় বরগুনায় কর্মরত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ২৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মেডিকেল অফিসার ইউনুস আলী।
এসময় ফিস্টুলা হওয়ার কারণ ও এ রোগ প্রতিরোধে করণীয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন আলোচকরা। স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগীতায় ইউএনএফপিএ ও বিডব্লিউএইচসি ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।
এসময় মেডিকেল অফিসার ডা. ইউনুস আলী বলেন, ফিস্টুলা রোগ হলে তার শরীর থেকে সারাক্ষণ গন্ধ বের হয়। এতে অনেক সময় বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটে। এই রোগীকে সবাই ঘৃনার চোখে দেখে। কিন্তু এই রোগের জন্য কোনো মতেই এই রোগী দায়ী নয়। প্রসবকালে যারা প্রসবের ব্যবস্থা করছে তাদের অসচেতনতাই তার এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ।
এছাড়া সভায় ফিস্টুলা প্রতিরোধে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, কিশোরী বয়সে ঘন ঘন সন্তান জন্মদান থেকে বিরত থাকা, নিয়মিত প্রসবপূর্ব ও প্রসব পরবর্তী সেবা গ্রহণ করা, জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করা, মিড ওয়াইফের মাধ্যমে বাড়িতে নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করা, বিলম্বিত ও বাঁধাগ্রস্থ প্রসব রোধ করা, সন্তান প্রসবের সময় নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র অথবা হাসপাতালে গিয়ে সেবা গ্রহণ করা, সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা এবং প্রসবজনিত ফিস্টুলা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করার ব্যাপারে আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে বিডাব্লিউএইচসির কর্মকর্তা বুবলি খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, পারিবারিক সচেতনতা ছাড়াও দেশের ১০টি সরকারি হাসপাতালে ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা নিলে ফিস্টুলা রোগী সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে যায়। তার শরীর থেকে কোনো ধরনের দুর্গন্ধ বের হয় না। সে আবার সন্তান ধারণ করতে পারে।
বরগুনায় প্রায় সাত হাজার ফিস্টুলা রোগী রয়েছে যাদের সচেতন করে চিকিৎসার আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৫
এসআই/