ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মাঝ বয়সেও গজাবে পড়ে যাওয়া দাঁত!

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৫
মাঝ বয়সেও গজাবে পড়ে যাওয়া দাঁত!

ঢাকা: মাঝ বয়সে দাঁত পড়ে গেলে আর গজায় নাকি! কিন্তু নতুন একটি গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে যেকোনো সময় দাঁত পড়ে গেলেই নতুন করে গজাবে।

আফ্রিকার রঙিন মাছ ‘সিক্লিড ফিশ’ থেকে নতুন করে দাঁত গজানোর এ রহস্য জানা গেছে।



দ্য জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও লন্ডনের কিংস কলেজ যৌথভাবে গবেষণা শেষে একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

গবেষকরা জানান, আফ্রিকার মালাউই লেকের এই মাছ তাদের প্রয়োজন মতো পাটির সব দাঁত পাল্টে ফেলে। যে জিনের মাধ্যমে দাঁত পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়, তা শনাক্ত করা গেলেই ম‍াঝবয়সী মানুষেরও পড়ে যাওয়া দাঁত গজাবে, এমনটিই দাবি প্রধান গবেষকের।

গবেষণা সহকারী পল সার্প বলেন, স্বাভাবিকভাবে মানুষের দাঁতের গঠন প্রক্রিয়া ও সিক্লিড মাছের স্বাভাবিক দাঁতের গঠন প্রক্রিয়া মিলিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।

আর এ গবেষণা দাঁতের পরবর্তী চিকিৎসায় হবে একটি মাইলফলক।

গবেষকরা আরও বলেন, সিক্লিড ফিশের দাঁতের সঙ্গে স্বাদের সম্পর্ক রয়েছে। কারণ, ওদের জিহ্বা নেই। ফলে দাঁত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাদ নেওয়ার টিস্যুও পরিবর্তিত হয়। এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে মাছের সময় লাগে মাত্র পাঁচ থেকে ছয় দিন। দাঁত গজানোর পাশাপাশি এসময় এপিথেলিয়াল সেল ও অন্য স্পর্শকাতর কাঠামো থেকে চর্বি সরে যায়। প্রাণীর চারটি মৌলিক টিস্যুর মধ্যে একটি হলো ‘এপিথেলিয়াল টিস্যু’।

গবেষকরা দুই ধরনের সিক্লিড ফিশের সন্ধান পান। এদের একটির অল্প দাঁতের প্রয়োজন হয়, কারণ তুলনামূলকভাবে এরা খায়ও কম। প্রায় ৩শ আলাদা আলাদা হাইব্রিড প্রজননের পর গবেষকরা দাঁত গজানোর জিন ও এপিথেলিয়াল টিস্যু নির্ধারণ করেন।

এরপর গবেষকরা ইঁদুরের উপর গবেষণা চালান। দেখার বিষয় ছিলো, এদের ক্ষেত্রে এপিথেলিয়াল জিন আলাদা হয় কিনা।

এ প্রসঙ্গে দ্য জর্জিয়া টেক স্কুল অব বায়োলজি’র অধ্যাপক ও গবেষণা সহকারী টোড স্ট্রিলম্যান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ইঁদুরের উপরে গবেষণা ‍চালিয়েছি। যদিও তা খুবই স্বল্প পরিসরে। এ গবেষণা সফল হলে মানুষের দাঁত সংক্রান্ত বি‍ড়ম্বনা আর থাকবে না।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, লাখো মানুষ দাঁত সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন। বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ৬০তম জন্মবার্ষিকীতে পৌঁছে সবগুলো দাঁত হারিয়ে ফেলেন।

উন্নত বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্রে কেভিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। ২০১২ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ২০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী ৯১ শতাংশ ব্যক্তি কেভিটিতে আক্রান্ত।

শেষ পর্যায়ে গবেষকরা ‍আরও দেখেন, একটি কেমিক্যাল একই সঙ্গে নতুন দাঁত গজাতে ও এপিথেলিয়াল টিস্যু পরিবর্তনে কাজ করে, এ দু’টি বিষয় আলাদা করা।

গবেষকরা বলেন, গবেষণাটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। মানুষ ও সিক্লিড ফিশের দাঁত গজানোর প্রক্রিয়াতে যথেষ্ঠ মিল পাওয়া গেছে। খুব তাড়াতাড়ি সুখবর জানানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৫
এটি/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।