ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

গরমে রাস্তার পাশের শরবতে সর্বনাশ

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৬
গরমে রাস্তার পাশের শরবতে সর্বনাশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চৈত্রের শেষ সপ্তাহে দেশজুড়ে চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ। এ নাভিশ্বাসের গরমে জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হওয়া মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত।

মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রায় শরীর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে পানি। এ অবস্থায় পিপাসা ও শরীরের পানির চাহিদা মেটাতে অনেকেই পান করছেন রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ দোকানের শরবত। এসব শরবত স্বাস্থ্যসম্মত কিনা সেটা নিয়েও যেন ভাবনা নেই কর্মজীবী ও খেটেখাওয়া এসব মানুষের।

তবে চিকিৎসকরা জানালেন, রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের শরবত নিরাপদ নয়। তাদের শরবতের পানি, বরফ কোথা থেকে আসে ঠিক নেই। এ শরবত পান করে পেটের অসুখ, হেপাটাইটিস এ বা বিসহ নানা রোগ হতে পারে।

তাদের মতে, তীব্র গরমে প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। সে পানি হতে পারে লেবু শবরত। কিংবা উচ্চরক্তচাপ না থাকলে খাবার স্যালাইনও পান করা যেতে পারে।

এদিকে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভ্রাম্যমাণ শরবত বিক্রেতারা যে ফিলটার বক্সে শরবত বিক্রি করছেন, তার বেশির ভাগেরই পানি ফিলটার করার সরঞ্জাম নেই। শুধু ফ্রেম আছে।

রামপুরা ওয়াবদা রোডের হুমায়ূন, কাকরাইলের সোলাইমান, মালিবাগের আখবিক্রেতা সোহেলসহ রামপুরা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ শরবতের ৫০ থেকে ৬০টি দোকান রয়েছে।

ফুটপাতের শরবত বিক্রেতা সোলাইমান বাংলানিউজকে জানান, দিনে ৩শ’ থেকে ৪শ’ গ্লাস শরবত বিক্রি হয়। পাম্প থেকে পানি কিনে আনা হয়। জার কিনে তাতে এ পানি ভরা হয়।

রামপুরায় ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকান থেকে লেবু শরবত পান করছিলেন সরকারি চাকরিজীবী আজিজুল হক। তিনি বলেন, লেবু দেখলেই খেতে ইচ্ছা করে। পানি বিশুদ্ধ কিনা জেনে খাওয়া দরকার। তবু তৃষ্ণা পেয়েছে খেলাম।

রিকশাচালক বাবুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তার পাশ থেকে দিনে প্রায় ১০ গ্লাস শরবত কিনে খাই। এটা পান করলে গরমে তৃপ্তি পাই। ভালো-খারাপ বুঝি না, রিকশা থামালেই শরবত। ৫ টাকা গ্লাস।

মেশিনে আখের টুকরা পিষে শরবত বিক্রি করেন হুমায়ূন। শরবত ঠাণ্ডা রাখতে মেশিনের মুখে বরফের চাঁই রাখেন তিনি। এ বরফ গলা পানি মেশে শরবতের সঙ্গে। এ বরফ নিরাপদ কিনা জানতে চাইলে হুমায়ূন বাংলানিউজকে বলেন, বরফ ফ্যাক্টরি থেকে আসে। এক পাটা বরফ ৬০ টাকায় কিনে আনি। হেরা তো কয় ভালা, তাই কিনে আনি। আমার দেখার কিছু নাই।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. সুদীপ রঞ্জন দেব বাংলানিউজকে বলেন, ভ্রাম্যমাণ শরবত বিক্রেতাদের পানি, বরফ কোথা থেকে আনা হয় তা না জেনেই আমরা সেটা পান করে থাকি। এসব শরবতে ব্যবহার করা বিট লবনও নিরাপদ নয়। তৃষ্ণা নিবারণের এ অসচেতনতা থেকে বিভিন্ন ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছি আমরা।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
এজেডএস/কেআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।