টেনিস এলবো অথবা লেটারাল এপিকনডাইলাইটিস একটি ব্যথাজনিত দশা। যা দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজে কনুইয়ের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ঘটে থাকে।
মূলত টেনিস এলবো বলতে কয়েকটি টেন্ডনের প্রদাহ সৃষ্টির দশাকে বুঝায়। এতে টেন্ডনগুলো হাতের বিশেষ করে কনুইয়ের বাইরের মাংসপেশীকে সংযুক্ত করে। কনুইয়ের অতিরিক্ত নড়াচড়া বা চাপের কারণে হাতের টেন্ডন এবং মাংসপেশীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বারবার কনুই জয়েন্টে নড়াচড়ার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি তীব্র ব্যথা অনুভব করে। এ ব্যথাটা কনুইয়ের বাইরের দিকেও অনুভূত হয়।
টেনিস এলবোর কারণ
১. অত্যধিক ব্যবহার
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, বিশেষভাবে বাহুর নিচের অংশের মাংসপেশীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবার কারণে টেনিস এলবোর সৃষ্টি হয়। কনুই সোজা থাকা অবস্থায় একটি মাংসপেশী এক্সটেনসর কারপি রেডিয়ালিস ব্রেভিস কব্জির জয়েন্টকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের সময় কিংবা নড়াচড়া করার সময় ওই মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে সঙ্গে সঙ্গে টেন্ডনটিতে ক্ষুদ্রভাবে ফাটল সৃষ্টি হয়।
টেন্ডনটি লেটারাল এপিকনডাইলের সঙ্গে জড়িত বলে সেখানে প্রদাহ ও ব্যথা অনুভূত হয়। এক্সটেনসর কারপি রেডিয়ালিস ব্রেভিস মাংসপেশীর অবস্থান ঠিক না থাকলে এটা টেনিস এলবো সৃষ্টির জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে। যখন কনুই ভাঁজ বা সোজা করা হয় তখন মাংসপেশী আচমকা সেখানকার অস্থিকে টান দেয়। মাংসপেশীর এই অত্যধিক টানে ক্রমাগত সেই ফাটলটি বড় হতে থাকে। এতে ব্যথা ও প্রদাহও বাড়তে থাকে।
২. বিভিন্ন কাজ
শুধু খেলোয়াড় কিংবা অ্যাথলেটরাই টেনিস এলবোতে আক্রান্ত হন না। এতে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত। যে কাজগুলো সম্পাদনের সময় বার বার প্রচণ্ডভাবে বাহুর নিচের অংশের মাংসপেশী কাজ করে। রঙ মিস্ত্রি, সীসক কর্মকার, ছুতার প্রভৃতি পেশাজীবীর লোক টেনিস এলবোতে আক্রান্ত হতে পারেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য পেশাজীবীদের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় শ্রমিক, রাঁধুনি এমনকি কসাইরাও টেনিস এলবোতে আক্রান্ত হতে পারেন।
আক্রান্ত ব্যক্তির বয়স
সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়স্ক ব্যক্তিরা টেনিস এলবোতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
টেনিস এলবোর লক্ষণসমূহ
টেনিস এলবোতে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে এর লক্ষণ ক্রমাগত বাড়তে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথা হালকাভাবে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে মাসের পর মাস তা বাড়তে থাকে। সাধারণত টেনিস এলবোর ক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো দেখা যায়-
ক. কনুইয়ের বাইরের অংশে ব্যথা ও জ্বালা-পোড়া করা
খ. কোন কিছু ধরতে গেলে শারীরিক দূর্বলতা অনুভূত হওয়া
তবে ব্যবহারকারীর হাতই এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়, এমনকি দুই হাতই আক্রান্ত হতে পারে।
বাকি অংশ পড়তে ক্লিক করুন >>>