কলকাতা থেকে ভেলোর যেতে হলে, দুটি পরিষেবা পাওয়া যায়, ট্রেন ও প্লেন।
সময় থাকলে রেলপথকেই বেছে নিন।
সপ্তাহে কলকাতা থেকে কাটপাটির উদ্দেশ্যে মোট ১০টি ট্রেন যায়। ক্লাস অনুযায়ী টিকিট মূল্য নির্ধারণ করা থাকে। এসি স্লিপার রিজার্ভেশন কোচ ২২শ' রুপি থেকে ২৫শ' রুপির মধ্যে থাকে। মনে রাখতে হবে ভারতে ট্রেন নামে নয়, কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে হয় ট্রেন নম্বরের মাধ্যমে।
যে ট্রেনগুলি সরাসরি কাটপাটি যায়, ১২৫১০-হাওড়া স্টেশন / ২২৮৬৩- হাওড়া স্টেশন / ১২৮৬৩-হাওড়া স্টেশন / ১৫২২৮-হাওড়া স্টেশন / ১২৮৬৭,- হাওড়া স্টেশন / ২২৮৮৭- হাওড়া স্টেশন / ১২২৫৪-হাওড়া স্টেশন / ২২৮১৭- হাওড়া স্টেশন। বাকি দুটি ট্রেন ছাড়ে ২২৬৪২- শালিমার স্টেশন ও ২২৮৫১- সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে।
সরাসরি কাটপাটির টিকিট না পেলে, যাওয়া যায় কলকাতা থেকে চেন্নাই হয়ে। তবে চেন্নাই হয়ে গেলে আপনাকে নামতে হবে চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে। সেখানে নেমে কাটপাটির উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে পড়ুন। কাটপাটি থেকে পথ আড়াই ঘণ্টার মত। মনে রাখবেন, ট্রেন ভেঙে উঠতে হলেও দুটি ট্রেনের একসাথে রিজার্ভেশন করুন কলকাতা থেকে। যা অনেকেই জানে না। তাহলে চেন্নাই নেমে কাটপাটির টিকিট কাটার ঝামেলা বা হয়রানি হতে হয় না।
যে ট্রেনগুলি সরাসরি চেন্নাই যায়, ১২৫১০- হাওড়া স্টেশন / ১২৮৪১- হাওড়া স্টেশন / ১২৬৬৫- হাওড়া স্টেশন / ১৫২২৮- হাওড়া / ১২৬৬৫ সপ্তাহে হাওড়া স্টেশন থেকে। বাকি একটি ট্রেন ০৬০০৯ ছাড়ে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে।
এতো ট্রেন হওয়া সত্বেও রিজার্ভেশন টিকিট পাওয়া সহজলভ্য নয়। তবে একটু সময় নিয়ে খোঁজ করলে পাওয়াটাও অসম্ভব নয়। কলকাতায় পৌছে যদি এই হ্যাপা না পোহাতে চান, তাহলে ট্রেন নম্বরগুলো নিয়ে কোনো এজেন্সি থেকে টিকিট কাটতে পারেন। সেক্ষেত্রে নির্ধারিত টিকিট মূল্য থেকে সার্ভিস চার্জ বাবদ প্রতি টিকিটে সর্বোচ্চ ১৫০ রুপি বেশী নিতে পারে। ট্রেন নম্বরগুলোর সঙ্গে রাখুন। কারণ সব এজেন্সি সমান পারদর্শী নয়। ট্রেন নম্বরগুলো সঙ্গে রাখলে চট করে আপনি জানতে পারবেন ট্রেনের স্ট্যাটাস। বাজেট অনুযায়ী পছন্দ করে কেটে নিন টিকিট। তবে দালাল থেকে সাবধান। লাইসেন্স প্রাপ্ত এজেন্সি আপনাকে ঠকাবে না।
ট্রেন ছাড়ার কম করে একঘণ্টা আগে স্টেশনে যাওয়াই শ্রেয়। ট্রেন স্টেশনে আসার পর প্লাটফর্ম খুঁজে বের করা জরুরি। তারপর কোচ নম্বর খুঁজতে হবে। তারপর খোঁজার পালা নির্দিষ্ট কামরা। প্রতিটি রিজার্ভেশন কামরার বাইরে থাকে নামের তালিকা। নাম খুঁজে সিট নম্বর অনুযায়ী আপনার আসনে বসুন। বুঝে বুঝে সবই করা যায়। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
ট্রেন লেট না থাকলে জার্নি ২৮ থেকে ৩২ ঘণ্টার। প্রতিটা ট্রেনেই থাকে প্যান্ট্রিকার। এখান থেকে যাত্রীদের খাবার সরবাহ করা হয়ে থাকে। কিছু ট্রেনে টিকিটের সাথে খাবারের মূল্য ধরা থাকে। আবার কিছু চলতি ট্রেনে প্যান্ট্রিকার থেকে খাবার কিনে খেতে হয়। তার অর্ডার প্যান্ট্রিকারের বয় এসে নিয়ে যায়।
কাটপাটি নেমে বাস বা অটো (সিএনজি) ধরে চলে আসুন সিএমসি হাসপাতালে। শেয়ারে অটোতে এলে লাগবে ৫০ রুপির মত। আর রোগী নিয়ে অটো রির্জাভ করলে লাগবে ১০০ রুপির মত। তবে এরা দু’শ’ থেকে আড়াইশ’ রুপি চায়। দরদাম করে অটোতে উঠুন। মনে রাখবেন, আপনি বেড়াতে আসেননি, এসেছেন চিকিৎসা করাতে। অতএব প্রতিটা রুপি হিসেব করে খরচ করা ভালো। হুইল চেয়ার পাওয়া যায় এক নম্বর প্লাটফর্ম থেকে।
এবার দেখা যাক প্লেন পরিষেবা বেছে নেবেন কিভাবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিনই প্লেন চলাচল করে কলকাতা থেকে চেন্নাই পর্যন্ত। সময় লাগে দু’ঘণ্টার একটু বেশী। চেন্নাই বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সরাসরি সিএমসি আসতে পারেন। প্লেনে ভাড়া লাগবে ৪ হাজার থেকে ছয় হাজার রুপি। খুব প্রয়োজন না হলে এভাবে না আসাই ভালো। বিমানবন্দরে নেমে হলুদ কালো রঙের ট্যাক্সি নিন। বলুন সিএমবিটি (চেন্নাই মফউসিস বাস টার্মিনাল) যাবো। ট্যাক্সি ভাড়া সর্বোচ্চ ১০০ রুপি, মিটারে। এটি সরকারি বাস স্ট্যান্ড। ১০ মিনিট অন্তর বাস ছাড়ে কাটপাটি বা ভেলোরের উদ্দেশ্যে। তিন ঘণ্টার পথ, ভাড়া ৮১ রুপি। আর যদি মনে করেন এসি বাসে যাবেন তাহলে বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি নিয়ে কোয়ামবেদু বাস স্টপে নামুন। ট্যাক্সি ভাড়া সর্বোচ্চ ১২০ রুপি, মিটারে। বেসরকারি এসি বাস সকাল ১০ থেকে রাত ১২টা অবধি পাওয়া যায়। ভাড়া আড়াইশ’ রুপি। পথ দু’ঘন্টার মত। ভেলোর নেমে ৫০ রুপি দিয়ে অটো রির্জাভ করে আসা যায় সিএমসি হাসপাতাল।
যদি আকাশ পথকেই বেছে নেন সে ক্ষেত্রে টিকিট কেটে নিন একমাস আগেই। তাহলে কলকাতা থেকে চেন্নাই ২৮শ’ থেকে ৩ হাজার রুপীর মধ্যে টিকিট পেতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৭
ভিএস/ এমসি/জেডএম