তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এতে ভয়ের কিছু নেই। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই এ রকমটা হচ্ছে।
বেসরকারি কোম্পানির চাকরিজীবী লুৎফা জাহান বাংলানিউজকে জানান, তিনি গত ৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। মূলত ঠাণ্ডায় সর্দি, কাশি ও জ্বর হচ্ছে। কখনো কখনো কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে এবং ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পার হয়ে যায়। সে সময় খুবই ঠাণ্ডা লাগে।
চিকিৎসক প্যারাসিটামল ও ব্যথার ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
চিকিৎসকরা বাংলানিউজকে জানান, বড়দের তুলনায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত অসুখে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে যেকোনো ধরনের ওষুধ সেবন করাতে মানা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, এটি মৌসুম পরিবর্তন জনিত ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। এ সময়টাতে নির্দিষ্ট কোনো প্রতিরোধ নেই, যা করলে এই ঠাণ্ডাজনিত জ্বর থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, শিশুদের জন্যে বাবা-মাকে সচেতন থাকতে হবে। ঠাণ্ডা থেকে যতোটা দূরে রাখা যায় এবং তাপমাত্রার সঙ্গে যেন শিশু খাপ খেয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ সময় বাতাসে ধুলার পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ভাইরাসজনিত অসুখ থেকে মুক্তি পেতে বুকের দুধ বড় ভূমিকা রাখে। ডা. রুহুল আমিন বলেন, ২৪ মাসের নিচে বয়স, এমন শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ালে তা থেকে বড় ফল পাওয়া যাবে। কোনো অবস্থাতেই যেন মা বুকের দুধ দেওয়া বন্ধ না করেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, এক সপ্তাহ আগের বৃষ্টির পর থেকে আবহাওয়া দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। এখন ঠিক শীত চলে এসেছে বলা যাবে না। তবে গরমের আধিক্য নেই। ঋতু পরিবর্তনের সময়টায় ভাইরাস জ্বর ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবদুর রহমান বলেন, এই ঠাণ্ডাজনিত রোগ পরিবারে সংক্রামক আকার হচ্ছে। একজন আক্রান্ত হলে সকলেই আক্রান্ত হচ্ছেন। প্যারাসিটামল ও অ্যান্টিহিস্টাসিন খেলেই এটি ভালো হয়ে যায়। সংক্রামক হওয়ায় বাইরের ধুলো থেকে যতো দূরে থাকা যায়, ততোই ভালো। আর আক্রান্ত হলে বাইরে না বের হওয়াই ভালো।
হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় রুমাল বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
তবে এ জ্বরে আতঙ্কিত না হয়ে বাসাতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া, যেমন ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছে দেওয়ার পরামর্শ দেন ডা. আবদুর রহমান। যদি জ্বর ৩ বা ৪ দিনের বেশি থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার অনুরোধও জানান।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও (মিটফোর্ড হাসপাতাল) চিকিৎসা নিতে আসা সর্দি-কাশি জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বেশি আসছেন মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
এমএন/ এএসআর