ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ধুঁকছে বরিশাল বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ক্লিনিক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
ধুঁকছে বরিশাল বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ক্লিনিক বরিশাল বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ক্লিনিক: বেহাল দশাই এখানে প্রকৃত দশা!

বরিশাল: অযত্ন-অবহেলায় ব্যাহত হচ্ছে বরিশাল বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। জরাজীর্ণ ভবন, জনবল সংকট আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে প্রতিষ্ঠানটি যেন নিজেই ধুঁকছে কঠিন ব্যাধিতে।

নগরীর আমানতগঞ্জে ১১ একর জমিতে ষাটের দশকে নির্মিত হয় বরিশাল বিভাগের একমাত্র বক্ষব্যাধি হাসপাতালটি। মাঠ, দীঘি আর গাছপালায় ভরা হাসপাতাল কমপ্লেক্সে রয়েছে পরে স্থাপিত হয়েছে ক্লিনিকও।

 

সূত্রে জানা গেছে, ২০ শয্যার হাসপাতালে ১৬টির মধ্যে ১২টি পদে কাগজে-কলমে লোক থাকলেও বাস্তবে রয়েছে এর চেয়েও কম। হাসপাতালে সহকারী নার্স পদে তিনজনের স্থলে একজনও নেই, কুকের দু’টি পদের একটি শূন্য। ঝাড়ুদারের দু’টি পদের মধ্যে একজন ডেপুটেশনে সিভিল সার্জন অফিসে আর অন্যজন সদর হাসপাতালে কর্মরত। সব মিলিয়ে অনুমোদিত ১৬টি পদের ৬টিই শূন্য রয়েছে।

সিনিয়র স্টাফ নার্সের তিনটি পদের স্থলে ডেপুটেশনে একজন আসায় একজন বেশি রয়েছেন। পাশাপাশি অফিস সহকারীর পদ না থাকলেও সে পদে ১০ বছর আগে ডেপুটেশনে এসে দায়িত্ব পালন করছেন এক নারী। বরিশাল বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ক্লিনিক: বেহাল দশাই এখানে প্রকৃত দশা! হাসপাতালের বক্ষব্যাধি ক্লিনিকেও ১৭টি পদের বিপরীতে ১৪ জন কর্মরত। গুরুত্বপূর্ণ জুনিয়র কনসালট্যান্ট (টিবি অ্যান্ড লেপ্রোসি) ও সহকারী নার্সের একটি করে পদ থাকলেও সে ‍দু’টি শূন্য রয়েছে। নার্সবিহীন ক্লিনিকে মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা চলছে। অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় চালকের পদটিও শূন্য।

সরেজমিনে হাসপাতাল কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, সংস্কারের অভাবে স্যাঁত স্যাঁতে ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবে সব জায়গায় ময়লার স্তূপ জমেছে।

অফিস সহকারী মিসকাত জাহানের অভিযোগ, সুইপার ও গার্ড না থাকায় নোংরা ও অরক্ষিত থাকে হাসপাতাল কমপ্লেক্স। মাদকসেবী-বখাটেদের উৎপাতে নারীদের রাতে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে থাকাটাই দায়।  

হাসপাতালের রোগী বিউটি বেগম (৬৫) জানান, টয়লেটের দরজা ভাঙা। ওয়ার্ডে জানালার গ্লাস না থাকায় ভেতরে বাতাস আসছে। সব সময় চিকিৎসক পাওয়া যায় না। হাসপাতালে ল্যাব না থাকায় বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে।

২০১৪ সালে নারী ও পুরুষ রোগীদের জন্য আলাদা এবং স্পেশালাইজড দু’টি এমডিআর কক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও তা চালু হয়নি।

ক্লিনিকে রয়েছে ল্যাবরেটরি, জিন এক্সপার্ট কক্ষ ও এক্স-রে মেশিন। ম্যানুয়াল পদ্ধতির এক্স-রে মেশিনটির জন্য বরাদ্দ কক্ষে রেডিয়েশন রোধক কোনো ব্যবস্থা নেই। পুরো ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে, দরজা-জানালাগুলোও ভাঙা।

সীমিত জনবল দিয়েও হাসপাতাল ও ক্লিনিক মিলে ইনডোর ও আউটডোর সেবা চালু রয়েছে বলে জানান বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ক্লিনিকটিতে ডায়াগনোসিসের জন্যও রোগী পাঠানো হয়। কিন্তু এখানে জুনিয়র কনসালট্যান্ট নেই। ফলে চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। আর পদ না থাকায় গার্ড দেওয়া সম্ভব নয় বলে রাতে নিজস্ব ব্যবস্থায় হাসপাতাল ও ক্লিনিকে লোক রাখা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
এমএস/আরআর/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।