বর্তমানে পাহাড়ে বৃষ্টির পরিমাণ যত বাড়ছে ততই ডেঙ্গুর আতঙ্কও বেড়ে চলেছে। তবে ডেঙ্গু জ্বরে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে।
রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসা আকরাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন শরীরে জ্বর থাকায় হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। ডাক্তাররা বলেছেন আমার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে।
তার পার্শ্ববর্তী বেডে চিকিৎসাধীন চন্দ্র শেখর চাকমাও একই কথা জানালেন।
এদিকে, সম্প্রতি রাঙামাটিতে বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধন স্প্রে ব্যবহার না করা, সময় মতো ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার না করা, ডাস্টবিন ও ড্রেন সময়মত পরিষ্কার না করার কারণে একদিকে যেমন পরিবেশ দুষিত হচ্ছে অন্যদিকে মশার উপদ্রবও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং উদাসীনতার কারণে জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে- গত মে মাসে রাঙামাটিতে ১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর জুন থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৫ জনে। এর মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে রাঙামাটি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের হয়। একটা ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার। অন্যটা হেমোরেজিক ফিভার। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিশেষ করে গরম এবং বর্ষার সময়ে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে।
বিশেষ করে বর্ষার শুরুতে নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত এডিস মশা বিস্তার লাভ করে। ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের হয়। তাই ডেঙ্গু জ্বরও চারবার হতে পারে। তবে যারা আগেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে রোগটি হলে সেটির ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে পৌর এলাকায় সিভিল সার্জনসহ আমরা এডিস মশা নিধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে কিছু এলাকায় মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হয়েছে। বাকি এলাকাগুলোতেও মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হবে। পাশাপাশি পৌর এলাকার বাসিন্দাদের তাদের নিজ নিজ এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য মাইকিংসহ দ্রুত প্রচারণা চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, রাঙামাটিতে হঠাৎ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি বিশেষজ্ঞ টিম জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জ্বরে আক্রান্ত মানুষের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে রির্পোট দিয়েছে। সেই হিসেবে জেলার কিছু কিছু জায়গায় চিকুনগুনিয়া এবং ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচতে হলে এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যাতে কামড়াতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
আরএ