মন্ত্রী বলেন, এমবিবিএস-এ ভর্তির ক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দিই না। কারণ তারা মানুষের চিকিৎসার মতো মহান ও স্পর্শকাতর কাজ করেন।
সোমবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) অডিটোরিয়ামে ৩৬তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, একবার কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান নেমে গিয়েছিল দেখে আমি সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক কোনোটাই ঠিকমতো ছিল না। কিছুদিন তা বন্ধও ছিল। কিন্তু ওইসব মেডিকেল কলেজের মালিকরা বড় আইনজীবীদের ধরে হাইকোর্ট থেকে রায় নিয়ে আবার তা চালু করেছেন। এতে সমাজের ক্ষতি হয়েছে বলেই আমি মনে করি।
চিকিৎসকদের গ্রামাঞ্চলে কাজ করার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকরা যেনো অন্যান্যভাবে নিগৃহীত না হন সেজন্য খুব দ্রুত আইন বাস্তবায়নের কাজ চলছে। শিগগিরই তা প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া তাদের নিজ এলাকায় আমরা পোস্টিং দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যাতে শান্তিতে তারা মানুষের চিকিৎসা করতে পারেন। তাই আমি তাদের আরও আন্তরিকভাবে গ্রামাঞ্চলে কাজ করতে বলবো।
এ সময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিএনপির এক নেতা বলেছেন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগ পার পাবে না। আমি বলবো, আমরা সংবিধানের দোহাই তো দেবোই। সংবিধান ছাড়া দেশ চলতে পারে না। এছাড়া ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেব বলেছেন, সংবিধান ছাড়াই নির্বাচন করা যায়। উনি তো এ কথা বলবেনই। কারণ উনি ‘নীতিহীন মানুষ’ ও সংবিধান মানেন না। সে কারণে তিনি দেশের একটি বাদে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, গতবার আমরা ফাঁকা মাঠ পেয়েছিলাম। তাই গোল দিয়েছিলাম। আপনারা এবার নির্বাচনে না এসে আবার সেই ফাঁকা মাঠ সৃষ্টি করে দিয়েন না। আর আপনাদের ইচ্ছেমতো নিয়ম পরিবর্তিত হবে না। সংবিধান অনুসারে সঠিক সময়ে কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা, বিএমএ’র সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমএ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ ও শেখ রফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ৩৬তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত ১৮০ জন সহকারী সার্জন যোগদান করেন। এদের মধ্যে ১২৬ জন পুরুষ ও ৫৪ জন নারী রয়েছেন। ২০১৬ সালে পরীক্ষা দেওয়ার পর ২০১৮ সালে এ সকল চিকিৎসকদের গেজেট এবং এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের যোগদান সম্পন্ন হয়।
নয়া চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো পেশাতে এখন প্রফেশনালিজম নেই। এই ঘাটতি চিকিৎসকদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। রোগীরা ভালো সেবা আশা করেন। আপনারা (নয়া বিসিএস ক্যাডার) রোগীদের সে আশা পূরণ করেন। জনগণ অহরহ দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে। সেই মানসিকতা আপনাদের অবদানের কারণেই দূর হবে। কেননা, স্বাস্থ্যখাতে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত। আমাদের শুধু প্রয়োজন চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮
এমএএম/টিএ