ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ফেনীতে বিনামূল্যে সেবার হাসপাতালে ব্যাপক সাড়া

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
ফেনীতে বিনামূল্যে সেবার হাসপাতালে ব্যাপক সাড়া নূরুর নাহার মণি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল, ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ফেনীতে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠান নূরুর নাহার মণি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল। বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ঢাকার শমরিতা হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. এ বি এম হারুন তার নিজ গ্রামে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে বিনামূল্যে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা থাকায় শুধু ফেনী জেলার নয়, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলার রোগীরাও ভিড় জমাচ্ছেন।

২০১৫ সালের ৬ মার্চ ফেনী থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ফাজিলপুর গ্রামে নূরুর নাহার মণি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল গড়ে উঠে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ এ হাসপাতালে রয়েছে পুরুষ, মহিলা, শিশু ওয়ার্ড।

হাসপাতালের বহির্বিভাগ সাধারণ রোগীদের জন্য সকাল ৮টা-দুপুর ১টা এবং বিকেল ৪টা-সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সপ্তাহে পাঁচদিন সব ধরনের রোগীর ব্যবস্থাপত্র ও অসহায় রোগীদের ওষুধ দেওয়া হয়।

চক্ষু চিকিৎসার জন্য আগত রোগীদের এ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চক্ষু সার্জন দ্বারা চোখের ছানি অফারেশনসহ সব প্রকার চিকিৎসা বিনামূল্যে করা হয়। অপারেশন, ওষুধ, খাওয়া-দাওয়া, হাসপাতালে থাকাসহ সবকিছুই বিনামূল্যে। এমনকি অসহায় রোগীদের আসা এবং চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার খরচও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা মাসে একবার চোখের অপারেশন হয়। কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া একদল শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাশ্রমে পালাক্রমে এখানে সেবা দিয়ে থাকে।  প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬০ জন রোগীর অপারেশন হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।

নূরুর নাহার মণি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল রোগ নির্ণয়ের জন্য রয়েছে আধুনিক ল্যাবরেটরি। এ ছাড়া টিকাদান কেন্দ্র, শিশু বিভাগ, মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র, ডেন্টাল চেকআপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চক্ষু পরীক্ষা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্রি মেডিকেল চেকআপসহ নিয়মিত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। আছে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা।  

বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. এ বি এম হারুনের পৃষ্ঠপোষকতায় এখানে গড়ে উঠেছে মসজিদ, পাঠাগারসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয়বর্ধক কর্মসূচি। তিনি ভবিষ্যতে নিজ গ্রামে বেকারত্ব দূরীকরণে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, নাসিং ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।

হাসপাতালের স্থানীয় তত্ত্বাবধায়ক এন এন এম আলমগীর বলেন, শমরিতা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এবিএম হারুন সাহেবের পৃষ্ঠপোষকতায় এ অঞ্চলে নূরুর নাহার মণি দাতব্য ও চক্ষু হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার আগেও তিনি (ডা. এবিএম হারুন) অসহায় এলাকাবাসীদের জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন।

সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক রিপন বলেন, ডা. এ বি এম হারুন একজন বড় মনের মানুষ। তিনি এলাকার মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। আমি মনে করি, এটা অনুকরণীয় বিষয়। তার এইসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা, আমি দায়িত্ব মনে করি। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক আছি।

হাসপাতালের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. এ বি এম হারুন বলেন, ১৯৭৬ সালে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করার পর চিন্তা করলাম এলাকায় অনেক গরিব-দুঃখী মানুষ রয়েছে। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে তাদের জন্য কী ভূমিকা রাখতে পারি? সেই চিন্তা থেকেই আমি এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৯ 
এসএইচডি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।