ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

দেশে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত ৬ কোটি মানুষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
দেশে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত ৬ কোটি মানুষ অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভা/ছবি: শাকিল

ঢাকা: দেশের প্রায় ছয় কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদী বি ভাইরাসে আক্রান্ত। এসব রোগীদের অনেকেরই কোনো এক সময় লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। 

রোববার (২৮ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ তথ্য উঠে আসে।

সভায় জানানো হয়, বিশ্বে হেপাটাইটিস বি ও সি মিলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখন ৩২৫ মিলিয়ন।

হেপাটাইটিস বি ও সি নিয়ে নিয়ে বসবাস করলেও তাদের ৮০ শতাংশ মানুষ রয়েছে প্রতিরোধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং চিকিৎসার বাইরে। প্রতিবছর ১০ জন রোগীর নয়জন রোগটির ধরন সম্পর্কে একেবারেই অবহিত না। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের জন্য বিশ্বমানের ওষুধ এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে। তবে জটিলতা তৈরি করছে নানা কুসংস্কার। যার মধ্যে রয়েছে ঝাড়ফুঁক, কবিরাজি, হোমিওপ্যাথি, গাছ-গাছড়ার রস খেয়ে চিকিৎসা দেওয়া।

অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন বলেন, হেপাটাইটিস বি বা সি চাইলেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। হেপাটাইটিস সি’র কোনো টিকা বের না হলেও তা চিকিৎসার মাধ্যমে পুরো সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে আমাদের দেশে এসব রোগ নিয়ে সচেতনার অভাব রয়েছে, সবাইকে সচেতন করলে আরও সফলতা আসবে।

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এসডিজি অর্জনে আমাদের হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নির্মূলে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে শিশুদের ক্ষেত্রে ১ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। আশার বাণী হলো আমরা ২০১৯ সালের মধ্যেই এটা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। দেশে শিশুদের মধ্যে বি ভাইরাসে আক্রান্ত ১ শতাংশের নিচে। আমরা চেষ্টা করছি ২০৩০ সালের অনেক আগেই এসডিজির লক্ষ্যে পৌঁছাতে।

ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিশুর জন্মের পরপরই এ রোগের ভ্যাকসিন দিলে তার ক্ষেত্রে ৮০ শতাশের বেশি নির্মূল সম্ভব। এটা ভয়ের কিছু নেই, নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগ নির্মূল সম্ভব।

ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের শরীরে ডায়াবেটিস, অ্যালার্জি হলে আর্মি, বিডিআর কিংবা পুলিশ বাহিনীতে চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। অথচ তার শরীরে হেপাটাইটিস ভাইরাস দেখা দিলে তাকে চাকরি দেওয়া হয় না। আবার অন্য চাকরির ক্ষেত্রেও এমনটা লক্ষ্য করা যায়। এ নিয়মের পরিবর্তন হওয়া উচিত। আমাদের মনে রাখতে হবে হেপাটাইটিস মানে ভয়ের কিছু নেই। এ রোগের চিকিৎসা নিলে রোগ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশের সভাপতি ডা. সেলিমুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ডা. অরুণ জ্যোতি তরফদার, ডা. মো. আব্দুর রহিম, ডা. ফারুক আহমেদ, ডা. প্রভাত কুমার পোদ্দার, সাংবাদিক ডা. নুরুল  ইসলাম হাসিব প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
ইএআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।