এর আগে তিনটি বেড নিয়ে হাসপাতালের ১৭ নম্বর কেবিনটিকে ডেঙ্গু কর্নার হিসেবে ঘোষণা করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশারি টানিয়ে ডেঙ্গু রোগীদের ভর্তি ও চিকিৎসা চলছিলো।
এদিকে, রামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১২ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে হাসপাতালে মোট ৩৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছিল। তার অবস্থাও এখন উন্নতির দিকে। অন্য ৩২ জন ডেঙ্গু কর্নার ও ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তবে এখন পর্যন্ত কেউই রাজশাহীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়েছেন।
জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ডিডি) ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের ২৫নম্বর ওয়ার্ডকে আলাদাভাবে ডেঙ্গু ওয়ার্ড বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এটি আগে চক্ষু ওয়ার্ড ছিল। এখন একজন ডেঙ্গু রোগীকে সেখানে ভর্তিও করা হয়েছে। সেখানে বর্তমানে ১৭টি বেড রয়েছে। সেখানে আরও তিনটি বেড সংযুক্ত করে ওয়ার্ডটি মোট ২০ শয্যার আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রূপ দেওয়া হবে।
আলাদাভাবে করা ওই ডেঙ্গু ওয়ার্ডে চারজন চিকিৎসক ও ছয়জন নার্স দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার চিকিৎসকরা সেখানকার ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম মনিটরিং করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, আর মাত্র কয়েক দিন পরেই ঈদ-উল-আজহা। ফলে সামনে সপ্তাহ থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজশাহীর বাড়িতে আসবেন। ফলে তাদের মধ্যে ডেঙ্গু রোগ নিয়েও অনেক আসবেন এ কথা ধরাই যায়। তাই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে রামেক হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে।
তবে ডেঙ্গু কর্নারটিও থাকছে। পরিস্থিতি বুঝে এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আপাতত এভাবেই ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে বলেও জানান হাসপাতাল উপ-পরিচালক।
ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস আরও বলেন, সোমবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত হাসপাতালে ৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এদের প্রত্যেকেরই ডেঙ্গু সনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ৫৩জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২০জন রোগী আবার সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িও ফিরে গেছেন।
আর ডেঙ্গু রোগ সনাক্ত করার উপকরণ ‘স্ট্রিপ’ ও ‘রিএজেন্ট’ সরবরাহের ব্যবস্থাও হয়েছে। বর্তমানে সিবিসি ও প্লাটিলেট পরীক্ষার ব্যবস্থা হাসপাতালে আছে। কিন্তু স্ট্রিপ এবং রিএজেন্ট সরবরাহ না থাকার কারণে এনএসওয়ান পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে এ পরীক্ষাটি করাতে হচ্ছিল। তবে আজ থেকে এগুলোর ব্যবস্থাও হয়েছে৷ তাই ডেঙ্গুর সব ধরনের সেবা এখন রামেক হাসপাতালেই সম্ভব বলেও জানান ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
এসএস/ওএইচ/