ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে কমেছে ডেঙ্গু রোগী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে কমেছে ডেঙ্গু রোগী সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে এসেছেন রোগীরা/ ছবি- ডি এইচ বাদল

ঢাকা: ঈদ পরবর্তী সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমেছে। ঈদের আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াইশ রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হতেন, ঈদের পর রোগীর সংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমেছে।

সোমবার (১৯ আগস্ট) সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য জানান।

তিনি জানান, আমরা মনে করেছিলাম ঈদ পরবর্তী ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়বে।

কিন্তু গত তিন-চার দিনের হিসাব অনুযায়ী আমরা দেখেছি রোগীর সংখ্যা কমেছে।

তিনি আরো জানান, ঈদের আগে হাসপাতালে পাঁচশ থেকে সাড়ে পাঁচশ রোগী  ভর্তি ছিল। ঈদ পরবর্তী প্রতিনিয়ত এর সংখ্যা কমছে। গত ১৩ আগস্ট (মঙ্গলবার)  ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল ৪৪৮ জন, ১৪ আগস্ট (বুধবার) ভর্তি ছিল ৪৩২ জন, ১৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ভর্তি ছিল ৪২৯ জন, ১৬ আগস্ট (শুক্রবার) ভর্তি ছিল ৪২২ জন, ১৭ আগস্ট (শনিবার) ভর্তি ছিল ৩৮৮ জন এবং ১৮ আগস্ট (রোববার) থেকে ১৯ আগস্ট সকাল পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৬৬ জন। অর্থাৎ প্রতিনিয়ত রোগীর সংখ্যা কমেছে।  

উত্তম কুমার বলেন, আমরা যদি নতুন রোগী ভর্তির কথা বলি সেক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত রোগী ভর্তির সংখ্যা কমছে। ১৩ আগস্ট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ৭৩ জন, ওইদিন ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৩২ জনকে; ১৪ আগস্ট ভর্তি হয়েছে ৬৬ জন, রোগী রিলিজ হয়েছে ৮২ জন; ১৫ আগস্ট ৭৯ জন রোগী ভর্তি হয়, রিলিজ হয় ৮২ জন, ১৬ আগস্ট ভর্তি হয়েছিল ৪৩ জন, রিলিজ হয়েছে ৫০ জন; ১৭ আগস্ট ৫২ জন ভর্তি হয়, রিলিজ হয় ৮৬ জন এবং ১৮ আগস্ট ৭৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে, একই সঙ্গে রিলিজ হয়েছে ৯৭ জন রোগী।

কিট ও মেশিনের সংকট রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কিটের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত কিট রয়েছে।

হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা চলছে ডেঙ্গু রোগীদেরতিনি আরো বলেন, রক্ত পরীক্ষার জন্য আমাদের দুটি মেশিন ছিল। আরও দুটি মেশিন আনা হয়েছে। মোট চারটি মেশিনের মধ্যে তিনটি মেশিন ২৪ ঘণ্টা সচল থাকে। প্রতিটি মেশিনে ২৪ ঘণ্টায় ২০০ জনের রক্ত পরীক্ষা করা যায়। একটি মেশিন ২৪ ঘণ্টা পরপর বিশ্রামে রাখা হয়। তাই প্রতিদিন তিনটি মেশিনে আমাদের ৬০০ জনের রক্ত পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। আমাদের এখানে প্রতিদিন  হাজার থেকে ১২শ লোক রক্ত পরীক্ষা করতে আসছেন। তারপরও এগুলো দিয়েই  কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। তবে ডিজি অফিসে একটি মেশিনের জন্য চিঠি দিয়েছি। এক্ষেত্রে শুধু মেশিন পেলেই হবে না, সেগুলো চালানোর লোক প্রয়োজন হবে বলে তিনি জানান।

হাসপাতালের পরিবেশ  নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় আমাদের এখানের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। আমরা চেষ্টা করছি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে। গত তিনদিন ধরে আমরা কয়েকজন ক্লিনার নিয়েছি। তারা সবসময় হাসপাতাল ও এর আশেপাশ পরিচ্ছন্ন  রাখছেন। তবে এক্ষেত্রে রোগী এবং রোগী স্বজনদেরও সচেতন হওয়ার জরুরি বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই দেখা যায় রোগীর জন্য স্বজনরা ডাব, পানিসহ ইত্যাদি খাবার নিয়ে আসছেন। সেগুলোর খোসা ডাস্টবিনে না ফেলে জানালা দিয়ে বা বারান্দা দিয়ে  খালি জায়গায় ফেলে দিচ্ছেন। এতে করে পরিষ্কার করলেও পরিবেশ সম্পন্ন  ঠিক রাখা সম্ভব হয় না বলে তিনি জানান।

হাসপাতালে দুটি লিফট অচল রয়েছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  যারা লিফট মেরামত করেন এরইমধ্যে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, আজকের মধ্যেই  লিফট ঠিক হয়ে যাবে।

উত্তম কুমার বলেন, আমাদের এখানে সর্বমোট ২২৬৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল, এর মধ্যে ছুটি পেয়েছেন ১৯০২। বর্তমানে ৩৬৬ জন ভর্তি রয়েছেন।  এর মধ্যে পুরুষ ১১৪ জন, নারী ১০৯ জন  ও ১৪৩ জন শিশু।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
এসএমএকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।