ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

প্রসূতিকে ওটিতে নিতে দেরি, নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৯
প্রসূতিকে ওটিতে নিতে দেরি, নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

বরিশাল: আয়াদের টাকা না দেওয়ায় অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিতে বিলম্ব হওয়ায় এক প্রসূতি মায়ের গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।  

এ নিয়ে রোগীর স্বজন এবং ওয়ার্ডে কর্মরত আয়া ও নার্সদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরে রোগীর স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে হালিমা বেগম নামে এক আয়াকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।  তবে হালিমাকে আটকের পর অন্য আয়ারা পালিয়ে যান।

এদিকে, শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আয়া পরিচয়ধারী আটক হালিমা হাসপাতালের বৈধ স্টাফ নন।
মৃত নবজাতকের বাবা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মধ্য কান্দেপপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল হাওলাদার জানান, তার স্ত্রী বিউটি বেগমের (২৫) প্রসব বেদনা শুরু হলে সকালে শেবাচিম হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে সিজার করানোর প্রস্তুতি নেন তিনি।

হাসপাতালে বিউটির সঙ্গে থাকা স্বজন রওশন আরা ও শারমিন আক্তার জানান, বেলা সোয়া ১১টার দিকে চিকিৎসক সিজারের প্রস্তুতি নিয়ে বিউটিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় হাসপাতালের  গাইনী ওয়ার্ডের আয়া হালিমা ও পপি আক্তারকে অনুরোধ করি ট্রলিতে করে বিউটিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা রাজি হন না। পরে বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার জন্য আয়া হালিমা ও পপি টাকা দাবি করেন। এ সময় রওশন আরা ও শারমিন তাদের জানান, তাদের সঙ্গে টাকা নাই। তবে পরবর্তীতে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও আয়ারা বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাননি।  

বিউটির স্বজন আরও জানান, এ বিষয়ে হাসপাতালের নার্সদের সহায়তা চাওয়া হলে তারাও অসদাচরণ করেন। পরে চিকিৎসকদের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যা রানী নামে এক আয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। সিজার শেষে বিউটি সুস্থ থাকলেও নবজাতকটি মৃত অবস্থায় আমাদের দেওয়া হয়।  

বিউটির স্বজনরা অভিযোগ করেন আয়া হালিমা ও পপিকে টাকা না দেওয়ায় বিউটিকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে যাওয়ায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা।

এদিকে, মৃত সন্তান প্রসবের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিউটির স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা হাসপাতালের নার্স ও আয়াদের ওপর চড়াও হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আয়া হালিমাকে আটক করে।

আটক হালিমা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বরাকোটা গ্রামের সুলতান হাওলাদারের স্ত্রী। তিনি শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে অবৈধভাবে আয়া হিসেবে কর্মরত ছিল।  

প্রসূতি বিভাগের আয়ারা কেউই সরকারি আয়া নন বলে জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাশেদুল ইসলাম।  

এদিকে, অস্ত্রোপচার শেষে বিউটিকে হাসপাতালের অবজারভেশন কক্ষে রাখা হয়েছে।  

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মৃত নবজাতকের স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে আয়া হালিমাকে আটক করা হয়েছে।  

এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা মামলা করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।