কেউ টানা ১২ বছর আবার কেউ পাঁচ বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও এসব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই পাঁচ চিকিৎসকের স্থলে অন্য কোনো চিকিৎসকও পদায়ন করা হয়নি।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে নাফিসা হালিম ২০০৫ সালের ২৪ জুলাই যোগদান করেন। যোগদানের পর ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বর্হি:বাংলাদেশ ছুটি নেন তিনি। ছুটি শেষ হওয়ার পর প্রায় ১২ বছর কেটে গেছে। কিন্তু নাফিসা হালিম আজও কর্মস্থলে যোগদান করেননি।
একই উপজেলার গোপালপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল কালাম ২০১১ সালের ১৬ জুলাই কর্মস্থলে যোগদান করেন। তার পর ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ২৮ তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের এই কর্মকর্তা প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক রেজুয়ানা ইসলাম ২০১৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। একইভাবে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক মো. সেলিম ভূঁইয়া ২০১৩ সালের ৯ জুলাই থেকে এবং মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন সায়মা হাফিজ ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত।
এসব চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো ছুটি না নিয়েই দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এ কারণে তাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়নি বা যে পদে পদায়ন আছেন সেখান থেকে প্রত্যাহারও করা হয়নি। এছাড়া দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলেও তাদের পদের বিপরীতে অন্য কাউকে পদায়নও করা যাচ্ছে না। ফলে কাগজে কলমে তারা ওই সব পদে থাকলেও মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বছরের পর বছর অনুপস্থিত থাকা এ চিকিৎসকরা কেউ কেউ বিদেশে গিয়ে নানা প্রকল্পে উচ্চ বেতনে চাকরি করছেন। বিদেশে চাকরি শেষে আবার দেশে ফিরে সরকারি চাকরিতে যোগদান করবেন এই উদ্দেশেই তারা চাকরি ছাড়ছেন না। অনেকেই স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে বা তদবির করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. শরীফ হোসেন খান বাংলানিউজকে জানান, এসব চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রত্যেক মাসের প্রতিবেদনেও তাদের অনুপস্থিতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
আরএ