ভারতীয় চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) এবং বাংলাদেশ আয়ুর্বেদ ফাউন্ডেশনের (বিএএফ) যৌথ উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ সরকারের পরিবার কল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারত সরকারের আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে এই এক্সপো।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আয়োজনের ভেন্যু রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এক্সপোর উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিমসটেক মহাসচিব রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম, আয়োজনের মুখ্য সমন্বয়ক এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, বিএএফের সভাপতি এবিএম গোলাম মোস্তফা, আইসিসির স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগের প্রধান সুজয় ঘোষ, ভারতের আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম পরামর্শক ড. এ রঘু, বিমসটেক সদর দফতরের জনস্বাস্থ্য খাতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক মিসেস চিমি পেম এবং মিডিয়া উপদেষ্টা মুজতবা আহমেদ মুরশেদ। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাগরিকদের প্রাথমিক সেবা নিশ্চিত করতে ট্রাডিশনাল মেডিসিনের ওপর জোর দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে বিষয়টি আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ’১১ সালে প্রণীত জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতেও এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান দেওয়া হয়। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এর ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয়। ট্রাডিশনাল মেডিসিন তৈরিতে দরকারি এমন প্রায় দুই হাজার গাছ-গাছরার প্রায় পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশেই পাওয়া যায়। ১৯৯৯ সালে প্রথম তৎকালীন এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনানি এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের সরকারি পর্যায় নিয়োগ দিয়েছিলেন যা ’১৪ এবং ’১৫ সালেও অব্যাহত রাখেন। বর্তমানে দেশের জেলা ও উপজেলা মিলিয়ে ১৩১ জন ট্রাডিশনাল মেডিসিন এ স্নাতক চিকিৎসকরা কাজ করছেন। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে দেশের তিন বিভাগ চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও বরিশালে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজ স্থাপনের এবং একটি জাতীয় গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের।
পরে এই আয়োজনের সর্বাত্মক সফলতা কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, এই এক্সপোর আয়োজন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এর মাধ্যমে ট্রাডিশনাল মেডিসিনের অনেক নতুন দিক উঠে আসবে যা এতদিন আমাদের অজানা ছিল। আমাদের এই অঞ্চল বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি। এই অঞ্চলের দেশগুলোর সম্মিলিত জিডিপি ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মাঝে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে দু’দেশের নাগরিকদের আরও উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। দু’দেশের মধ্যে ৭টি পারস্পরিক সহযোগিতার প্রকল্প চালু আছে স্বাস্থ্যখাতে। ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়েছে। ট্রাডিশনাল হেলথ কেয়ার নিয়ে দু’দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
এক্সপো সম্পর্কে এর আয়োজনের মুখ্য সমন্বয়ক এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী বলেন, বিশ্বব্যাপী এখন ট্রাডিশনাল মেডিসিনের কথা বলা হচ্ছে। এই মেডিসিন নিয়ে ক্ষুদ্র করে হলেও আলোড়ন তৈরি হয়েছে। এমন একটি সময়ে এই ধরনের আয়োজন সত্যিই দারুণ মাত্রা যোগ করবে। আমরা আশা করি, এই এক্সপোর মাধ্যমে এই অঞ্চলে ট্রাডিশনাল মেডিসিনের বাজার আরও বড় হবে, একে অপরের মধ্যে নেটওয়ার্কিং হবে, দেশগুলোর মধ্যে পণ্য আমদানি রপ্তানি হবে। একই সঙ্গে নলেজ শেয়ারিং বাড়বে। বাংলাদেশ ও ভারতের সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
আয়োজকেরা জানান, এই এক্সপোতে ভারত ও বাংলাদেশের ৪০টি প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল দেবে। এছাড়াও বিমসটেকভুক্ত অন্য রাষ্ট্র এবং বিমসটেক এর বাইরেও বিভিন্ন দেশ থেকে ট্রাডিশনাল মেডিসিন গবেষক, প্রস্তুতকারক, বিক্রেতা এবং একাডেমিক প্রফেশনালসরা অংশ নেবেন। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনী প্রাঙ্গণ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
এসএইচ/এস/এএটি