ঢাকা, বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ভারতে কোভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
ভারতে কোভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু

ঢাকা: ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ব্যাপক আকারে তাদের করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ‘কোভ্যাকসিন’ এর তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে।

ভারতে পরিচালিত সর্ববৃহৎ কার্যকারিতা পরীক্ষা এবং করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য সংস্থাটি মোট ২৬ হাজার অংশগ্রহণকারীদের তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে।

ট্রায়ালের অংশ হিসেবে, আগামী কয়েক মাসে দেশব্যাপী ২৫টি ট্রায়াল সাইটের মাধ্যমে ২৬ হাজার অংশগ্রহণকারীকে তালিকাভুক্ত করা হবে। তারপরে স্বেচ্ছাসেবীরা প্রায় ২৮ দিনের ব্যবধানে টিকার দু’টি ডোজ নেবেন। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক স্বেচ্ছাসেবীদের বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। অংশগ্রহণকারীদের দৈবচয়নের মাধ্যমে কোভ্যাকসিনের দু’টি ছয় মাইক্রোগ্রাম (এমসিজি) ইনজেকশন বা দু’টি প্লাসেবো শট পাওয়ার জন্য সমানভাবে বিভক্ত করা হবে।

সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ট্রায়ালের ব্যাপারে গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে, যেমন- তদন্তকারী, স্বেচ্ছাসেবী এবং কোম্পানির কেউই জানবেন না কাকে কোন গ্রুপে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ম ও ২য় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এক হাজার অংশগ্রহণকারীদের ওপর কোভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, তাতে আশাব্যঞ্জক সুরক্ষা এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখিয়েছে ভ্যাকসিনটি। ভারত সরকারের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রি সম্পর্কিত তথ্য অনুসারে, ২৫টি সাইটের মধ্যে আটটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য তাদের নিজ নিজ নৈতিকতা কমিটি থেকে অনুমোদন পেয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল মানদণ্ড অনুসারে, প্রতিটি ট্রায়াল সাইটের নিজস্ব নৈতিকতা কমিটি রয়েছে যা পরিচালিত ট্রায়ালটি নৈতিকতা এবং গবেষণা প্রটোকল মেনে হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করে।

আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের (এএমইউ) উপাচার্য তারিক মনসুর বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রায়ালের জন্য প্রথম স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। ট্রায়াল প্রটোকল অনুসারে, একটি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নির্ধারণের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রথমে এটি দেখা হবে, দুই ডোজ শট কোনোও রোগীকে করোনার লক্ষণগুলি বিকাশ করতে বাধা দিতে পারে কি না। দ্বিতীয়ত, কোনোও রোগীর মধ্যে রোগের গুরুতর লক্ষণগুলি ও মৃত্যু এড়াতে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর তা পরিমাপ করা হবে।

ভারত বায়োটেকের নির্বাহী পরিচালক সাই প্রসাদ গত মাসে বলেন, ‘সংস্থাটি আগামী বছরের জুনের মধ্যে তাদের করোনা ভ্যাকসিনটি চালু করার পরিকল্পনা করেছে। যদি না সরকার এর আগে এ ভ্যাকসিনটিকে আগেকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ভিত্তিতে জরুরিভাবে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কার্যকারিতা তথ্য যদি ইতিবাচক হয় তবে এটি আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে চালু করা হতে পারে। তাহলে এটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ডের পরে ভারতে চালু হওয়া দ্বিতীয় টিকা হবে। ’

তিনি বলেন, ‘তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় সংস্থাটি প্রায় ১৫০ কোটি রুপি এবং একটি নতুন প্ল্যান্ট (যা ডিসেম্বরের মধ্যে চালু হবে) স্থাপনে আরও ১২০-১৫০ কোটি রুপি ব্যয় করছে। ভারত বায়োটেক তাদের হায়দ্রাবাদ প্ল্যান্টে নিজ দায়িত্বে কিছু ডোজ উৎপাদন করতে শুরু করেছে। যার বর্তমান বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডোজ। নতুন প্ল্যান্ট স্থাপনের পাশাপাশি সংস্থাটি কোভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য তৃতীয় একটি স্থাপনা ব্যবহার করতে চেষ্টা করছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘হায়দ্রাবাদে আমাদের প্ল্যান্টের মতো আরেকটি বৃহৎ আকারের প্ল্যান্ট আমরা অন্য শহরেও তৈরির চেষ্টা করছি। যেগুলোর (পুরাতন ও নতুন প্ল্যান্ট) মাধ্যমে আমরা কোভ্যাকসিন উৎপাদন বছরে ৫০০ মিলিয়ন থেকে ১ বিলিয়নে উন্নীত করবো। ’

বাংলাদেশ সময়:  ১৮.০৪ ঘন্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২০
টিআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।