ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শীতে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বেশি আক্রান্ত শিশুরা

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২১
শীতে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বেশি আক্রান্ত শিশুরা

ফেনী: শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেনীতে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এতে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

ফলশ্রুতিতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনালের হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গত কয়েকদিন ধরেই দ্বিগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে।

এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বলছেন শীত বাড়লে শিশুদের ডায়রিয়াও বাড়ছে। গত কয়েকদিন ডায়রিয়া নিয়ে আসাদের মধ্যে অনেকেই রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।  
 
ফেনী জেনালের হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবার হোসেন ভূঞাঁ বলেন, গেলো বছরের নভেম্বরে প্রতিদিন গড়ে ২১ জন শিশু ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি থাকলেও ডিসেম্বরে তা ৩৩ থেকে ৩৫ জনে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) ভর্তিকৃত ৩৪ জনের মধ্যে ৩১ জনই শিশু।  

তিনি বলেন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে ১৮টি। প্রতিদিনই শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকে।  চিকিৎসকরা বলেছেন, শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে বাজারে বেসরকারিভাবে প্রচলিত আছে রোটা ভ্যাকসিন।  

সরকারিভাবে এ টিকা প্রসঙ্গে আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবার হোসেন ভূঞাঁ বলেন, এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষণা চলমান।  

নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শিশুদের ডায়রিয়া। একটা সাধারণ ধারণা আছে, শুধু রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়। এ ধারণা ভুল, রোটা ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য জীবাণুতেও ডায়রিয়া হতে পারে। তাই রোটা ভ্যাকসিন সবসময় কার্যকর হবে এমন কথা নেই।  

ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের হোসনা আক্তার (৩৫)।  তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এক বছর বয়সি মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। মেয়েটি বমি ও পাতলা পায়খানা করছে। হাসপাতালে একদিন রাখার পর অবস্থার কিছুটা উন্নীতি হয়েছে।  

ফুলগাজী উপজেলার জগতপুর থেকে ছয় মাস বয়সি মেয়ে ফেরদৌসকে নিয়ে হাসপাতালের এসেছেন খোদেজা বেগম।  তিনি বলেন, গত চার-পাঁচদিন ধরে মেয়ের বমি আর পাতলা পায়খানা হচ্ছে। গ্রাম্যচিকিৎসক দেখানোর পরও সারেনি। তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি।  

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় শয্যা সংকট থাকায় হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতে অনেকে সেবা নিচ্ছে। আবার অনেক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় ডায়রিয়া ওয়ার্ডে সামনের খালি জায়গাতেই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।  

তবে ডায়রিয়ার কারণে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি জানিয়ে হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবার হোসেন ভূঞাঁ বলেন, আমাদের এখানে শয্যার সংখ্যা কম থাকলেও জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যাপ্ত রয়েছে। কিছুটা কষ্ট করলেও ভালো চিকিৎসা পাবে সব রোগী।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২১
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।