কক্সবাজার: কক্সবাজারে করোনা সংক্রমণ বাড়লে আগের বিশেষ আইসোলেশন সেন্টার ও হাসপাতালগুলো পুনরায় চালু করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি পুরনো হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারকে প্রয়োজনীয় সময়ে কাজে লাগানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ।
জেলা প্রশাসক জানান, বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা রোগীদের জন্য যে শয্যা বরাদ্দ রয়েছে তাতে এখনও পর্যন্ত শয্যা সংকট হয়নি।
গত কয়েকদিনে লকডাউনের কারণে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। ফলে লকডাউনের চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।
তবে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে যথারীতি মাঠে রয়েছে পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি পালনে উদ্বুদ্ব করার পাশাপাশি কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে যাচ্ছে। এতে করোনা সংক্রমণ রোধে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, গত তিন-চার দিন ধরে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে আসছে। চার দিন আগের তুলনায় এ হার প্রায় ২৫ শতাংশ কমেছে।
তিনি জানান, বুধবার কক্সবাজারে করোনা ধরা পড়েছে ৫৮ জনের। আগেরদিন এ সংখ্যা ছিল ৮১ জন এবং তার আগেরদিন ৮৩ জন। নতুন করে করোনার ধাক্কা আসার পর সংক্রমণ কমে আসার এ হার আশাব্যঞ্জক।
এদিকে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) থেকে আগামী ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত দিনের বেলায় দোকান খোলার নির্দেশনা পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে কক্সবাজার শহরের পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
এসময় শহরের যানবাহন চলাচল কিছুটা শিথিল করা হয়। অলি-গলিতে দোকানপাটও খুলতে শুরু করে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে পথচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করতে চান। কারণ আসছে ঈদ ও বৈশাখী উৎসবকে সামনে রেখে তারা পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন।
শহরের দোকান ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আমিনুল ইসলাম জানান, দোকানে শপিংয়ে আসা গ্রাহকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে তারা উদ্বুদ্ধ করবেন। প্রয়োজনে মাস্ক ছাড়া তারা পণ্য বিক্রি করবেন না। স্বাস্থ্যবিধির শর্ত মেনেই তারা ব্যবসা চালাতে চান।
তবে লকডাউনে সরবরাহ না থাকার অজুহাতে খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশিরভাগ পণ্যে দাম ৫ থেকে ১০ টাকা হারে বাড়িয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার শহরের প্রধান সড়কের মাকেট, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানুষের ভিড় থাকলেও সৈকত পাড়ের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীর মোড় হোটেল-মোটেল জোন ছিলো একেবারে জনশূন্য।
কলাতলী রোদেলা রেস্তোরার সহকারী ব্যবস্থাপক বেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, তাদের অন্তত বিশ জন কর্মচারীকে বাধ্য হয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। কারণ সামনে রোজা রেস্তোরা এমনিতেই বন্ধ করতে হতো। তাই এখনই তাদের বিদায় করে দিয়েছি। পরিস্থিতি ভাল হলে তাদের খবর দেওয়া হবে।
রেস্তোরাঁর কর্মচারী আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এখন আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্দশায় পড়েছি। দীঘদিন লকডাউনের পরে ২-৩ মাস ধরে পর্যটক থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য জমে উঠেছিলো। এখন তারা বেশ অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২১
এসবি/কেএআর