রাজশাহী: রাজশাহীতে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়ে এসএমএস না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রেজিস্ট্রেশন ফরমে দ্বিতীয় ডোজের তারিখ দেওয়া থাকলেও কনফার্মেশন এসএমএস না পাওয়ায় টিকা দিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই! ফলে রোজা থেকে তীব্র রোদ-গরম উপেক্ষা করে নির্ধারিত দিনে তারা টিকাদান কেন্দ্র গিয়ে হয়রানি হচ্ছেন।
টিকা গ্রহণেচ্ছুদের অভিযোগ, প্রথম ডোজ দেওয়ার সময়ই দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়ার তারিখ রেজিস্ট্রেশন ফরমে লিখে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসএমএস জটিলতায় নির্ধারিত দিনে টিকা নিতে গিয়ে শত শত মানুষ বিড়ম্বনার মুখে পড়ছেন। প্রতিদিন এর সংখ্যা বাড়ছেই।
তবে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের টিকাকর্মীরা বলছেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের গাফলতির কারণেই টিকা গ্রহণেচ্ছুদের এমন বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে প্রতিদিন। এতে টিকাদান কার্যক্রম নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এগোচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীতে তিনটি কেন্দ্রে টিকাদান চলছে। রাজশাহী পুলিশ লাইন হাসপাতাল, সেনা হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার করে মানুষ টিকা দিচ্ছেন। যদিও রাজশাহীতে প্রতিদিন টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে তিন হাজারের বেশি। গত ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এরপর থেকে এসএমএস জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
রেজিস্ট্রেশন ফরমে উল্লেখ করা তারিখ দেখে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে গত বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) টিকা দিতে যান ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম। এসএমএস না যাওয়ায় তাকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শেষে হেল্প ডেস্কে গেলে জানানো হয় আমাকে টিকা দেওয়া যাবে না। কারণ এসএমএস পাঠানো হয়নি। পরে হাসপাতালের পরিচিত একজন কর্মকর্তার সহায়তায় বিশেষ বুথে গিয়ে টিকা নিয়েছেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেসদৌস বাংলানিউজকে বলেন, এসএমএস না পেলে কাউকে টিকা দেওয়া যাবে না বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা রয়েছে।
ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ ও সরবরাহ আছে। কিন্তু এসএমএস জটিলতায় অনেকেই টিকা নিতে পারছেন না। এসএমএস পাঠানোর বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। মহানগর এলাকায় দ্বিতীয় ও বাদপড়া প্রথম ডোজের রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্তদের এসএমএস পাঠানোর দায়িত্ব রাজশাহী সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের বলেও এ সময় উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা বেগম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এসএমএস পাওয়া যাচ্ছে না এ কথাটাই সঠিক নয়। প্রতিদিনই সংশ্লিষ্টরা এসএমএস পাচ্ছেন এবং টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকাও নিচ্ছেন। এখন রাজশাহী সিটি করপোরেশন এসএমএস পাঠায় না। সিটি করপোশন থেকে কেবল ডাটা এন্ট্রি করে তা পাঠানো হয়। মূলত সুরক্ষা অ্যাপস থেকেই সংশ্লিষ্টদের মোবাইলে এসএমএস যায়। এক্ষেত্রে লাখ লাখ মানুষের মধ্যে কোনো কারণে দুই-একটি এসএমএস না যেতেই পারে। তবে কেউ অভিযোগ করলে সেটি ঠিক করে দেওয়া হয় বলেও উল্লেখ করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
এসএস/আরবি