নাটোর: নাটোরে জেলা প্রশাসন ঘোষিত ‘লকডাউনে’র ৬ষ্ঠ দিন চলছে আজ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৭১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে করনোয় আক্রান্ত হয়ে মরিয়ম বেগম (৬০) ও আজগরর আলী (৭০) নামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৪ জনে আর আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতলের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৪২ জন। অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোমবার (১৪ জুন) বিকেলে নাটোরের সিভিল সার্জল ডা. কাজী মিজানুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, সাধারণ মানুষ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন। তারা কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ফলে নাটোর জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে।
তিনি বলেন, সদর হাসপাতালে করোনার ৩১টি আসন ছিল, তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০টিতে। স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল রোববার সকালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেছেন। তবে করোনা নিয়ে ক্রমেই শঙ্কা বাড়ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন ‘লকডাউন’ ঘোষণা দিয়ে মাঠে একধিক মনিটরিং টিম কাজ করলেও শহরের আনাচে-কানাচে মানুষের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে অন্যদিনের মত আজকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের ‘লকডাউন’ সফল করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ‘লকডাউনে’ স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। এতো কিছুর পরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনিহা সাধারণ মানুষের। প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে যাচ্ছে রাস্তা বা হাট-বাজারে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নাটোর ও সিংড়া পৌর এলাকায় জেলা প্রশাসন ঘোষিত সাত দিনের ‘লকডাউনে’র ৬ষ্ঠ দিন চলছে আজ। এই কয়দিনেই নিম্ন আয়ের মানুষদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। তাদের দুর্ভোগ লাঘবে শুরু হয়েছে নগদ অর্থ সহায়তা ও চাল বিতরণ কার্যক্রম। নাটোর পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মেয়র উমা চৌধুরী জলি এসব খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছেন। রোববার নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রী মানবিক সহায়তা হিসেরে প্রায় ১ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন।
এছাড়া ৩৩৩ নম্বরে ফোন কলে পাওয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম কর্মহীন মানুষদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। তিনি করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধসহ মাস্ক পরিধান করে চলাচল করার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া নাটোর পৌরসভায় ৪৪ কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে গতকাল রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পৌরসভা কার্যালয়ে ‘লকডাউন’ চলছে। পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি এই ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বাংলানিউজকে জানান, কঠোর ‘বিধিনিষেধ’ দেওয়া সত্বেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাচ্ছেন না। ফলে নাটোরে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমছে না। এখনও রেডজোনের তালিকায় রয়েছে নাটোর। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মানবিক সহায়তা হিসেবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে তৎপর রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২১
আরএ