বান্দরবান: সেনাবাহিনীর সহায়তায় হেলিকপ্টারে করে বান্দরবানের আলীকদমের দুর্গম কুরুকপাতা থেকে ৩ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী এলো বান্দরবান সদর হাসপাতালে।
বুধবার (১৬ জুন) দুপুর ২টায় তাদের বান্দরবান সেনানিবাস এলাকার হেলিপ্যাডে নামানোর পর অ্যাম্বুলেন্সে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা যায়, গেল কয়েকদিন ধরে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার কুরকপাতা ইউনিয়নের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েজনের মৃত্যু হয়েছে।
সেনাবাহিনী আরো জানায়, পুরো কুরুকপাতা ইউনিয়নে ডায়রিয়ায় প্রায় শতাধিক নারী পুরুষ আক্রান্ত হয়ে যাওয়ায় গুরত্বর এক নারী ও ২ শিশুকে জরুরি ভিত্তিতে হেলিকপ্টারে করে আলীকদমের কুরুকপাতা থেকে বান্দরবান সদরে নিয়ে আসা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদরে নিয়ে আসা ডায়রিয়া রোগীদের মধ্যে মেনলে ম্রো (৫) আং চং ম্রো (৭০) ও রেপং ম্রো (১২)। তারা সবাই আলীকদমের দুর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নের মাংরুম পাড়ার বাসিন্দা।
সেনাবাহিনী আরো জানায়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিপুল সংখ্যক জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাওয়ার স্যালাইন, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়েছে এবং ডায়রিয়া আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
বান্দরবান সেনারিজিয়নের ৭ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. সাইফুল ইসলাম (সাইফ) বাংলানিউজকে জানান, আলীকদমে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংবাদ পাওয়ায় পরপরই সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে এবং যারা বেশি আক্রান্ত তাদের হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. সাইফুল ইসলাম (সাইফ) আরো জানান, সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর যেকোনো আপদকালীন সময়ে তাদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছে এটি তারই একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীসহ সকল জাতি ও ধর্মের মানুষের পাশে থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের যেকোন প্রয়োজনে সর্বদা নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।
এদিকে আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্রাতং ম্রো জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গেল এক সপ্তাহে ৮ জন মারা গেছে আর শতাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন পাড়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, সেনাবাহিনী বিভিন্ন পাড়ায় চিকিৎসা সেবা শুরু করার পর আক্রান্তের হার অনেকটাই কমে এসেছে এবং সেনাবাহিনীর বিভিন্নভাবে পাড়ার বাসিন্দাদের সহায়তা করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২১
এনটি