সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্নে একাধিক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। গঠিত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কাজী আরিফ আহমেদকে। কমিটির অন্য দুইজন সদস্য হলেন, সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মারুফ আহমেদ ও সামেক হাসপাতালের ডা. সাইফুল্লাহ।
অক্সিজেন সংকটে মৃত্যুবরণকারী রোগীদের স্বজনরা জানান, করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আড়াই শতাধিক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়ে ও করোনার উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তি রয়েছেন। এই হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় হঠাৎ করে অক্সিজেন সরবরাহের লাইনে প্রেসার কমে যায়। ফলে তীব্র অক্সিজেন সংকটে পড়েন রোগীরা। ঘণ্টা দেড়েক এ অবস্থা বিরাজ করছিল। এতে অন্তত ১০ জন রোগীর মৃত্যু হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, অক্সিজেন সিস্টেমে যেসব কারিগরি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন, তাদের অবহেলায় এতোগুলো রোগীর জীবন দিতে হলো। সময়মত পর্যবেক্ষণে রাখলে যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি তাৎক্ষণিক সমাধান করা যেত।
তিনি আরও বলেন, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যা হলে, বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া যেত।
সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. মানস কুমার মণ্ডল বলেন, বিকেল থেকে হাসপাতালের সেন্টার অক্সিজেন সিস্টেমের প্রেসার কমে যায়। সকালে এই বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। যশোর থেকে অক্সিজেন নিয়ে আসা হয়েছে। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরপরই হাসপাতালেন সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম স্বাভাবিক হয়েছে।
সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, দায়িত্বশীলদের গাফিলতির কারণেই এক সঙ্গে এতোগুলো প্রাণ গেল। এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত এবং মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অন্য অনিয়মগুলোও খতিয়ে দেখা উচিত। ভবিষ্যতে যেন এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন ডা. শাফায়ত বাংলানিউজকে বলেন, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সংকট দেখা দেওয়ার কথা ছিল না। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছাড়াও ৭০টির অধিক সিলিন্ডার আছে। এখানে দায়িত্বশীলদের কোনো গাফিলতি ছিলো কি না বিষয়টি খতিয়ে দেখবে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সামেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খুদা জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অক্সিজেনের প্রেসার কমে যায়। ফলে আইসিইউ’র মধ্যে ৪ জন রোগী মারা যান। অক্সিজেন ঠিক ছিল। অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি ছিল না। তবে কি কারণে অক্সিজেনের প্রেসার কমে গেল, তা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০২১
এনটি