ফেনী: ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য প্রয়োজন হচ্ছে আইসিইউ। পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে প্রতিদিন।
আইসিইউ চালুর জন্য যে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন প্রয়োজন এটিও উদ্বোধনের দেড় মাসে চালু করা যায়নি। বাধ্য হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা করোনারোগীদের দৌড়াতে হচ্ছে ঢাকা বা চট্টগ্রামের দিকে। এতে চিকিৎসা ব্যয়, মৃত্যুঝুঁকি দু’টিই বাড়ছে।
তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের কাজ শতকরা ৮০ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে, বাকি কাজ দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাপ্ত হলেই ১০ বেড আইসিইউ পরিপূর্ণভাবে চালু করা যাবে।
হাসপাতালে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ভেন্টিলেটর, সি-পেপ মেশিন থাকলেও দেড় বছরেও কেন ১০ বেড পরিপূর্ণভাবে চালু করা যায়নি, তার সুনির্দিষ্ট কারণ কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি। তবে জনবল সংকটও এর একটি কারণ বলে জানান হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের মে মাসে ঘটা করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ উদ্বোধন করা। কোনোরকমে মাত্র দু’টি বেডে আইসিইউ সেবা চলছে দীর্ঘদিন। একইভাবে চলতি বছরের ১৪ মে এই হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের কাজ শুরু হয়। এটি স্থাপনে অর্থায়ন করছে ইউনিসেফ। এ কাজ সম্পন্ন হলে এ হাসপাতালের রোগীদের অক্সিজেনের জন্য আর ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম ছুটতে হবে না। এতে করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুঝুঁকি কমবে এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের দুর্ভোগও লাঘব হবে। এমনটা মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১২ হাজার লিটারের এই ট্যাংকটি স্থাপনের কাজ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে সিলিন্ডারের অক্সিজেনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গত এপ্রিল মাস থেকে ইউনিসেফের অর্থায়নে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনকাজ শুরু হয়।
তারা জানায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদরের হাসপাতালটিতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডেই কপার পাইপ, ভ্যাপারাইজারসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনের কাজ চলছে। প্রায় সবক’টি শয্যার পাশে থাকবে অক্সিজেন পোর্ট।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান, এতদিন অক্সিজেন সরবরাহের অভাবে আইসিইউ চালু করা যায়নি। ট্যাংক স্থাপনের ফলে জেলায় অক্সিজেন সংকট থাকবে না। এ অক্সিজেন দিয়েই পর্যায়ক্রমে ১০ শয্যার আইসিইউ চালু করা যাবে।
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৪০ থেকে ৬০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন লাগে। হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক না থাকায় সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতো। অনেক রোগীকে ঢাকা, চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হতো। এখন থেকে রোগীদের সঠিক সময়ে অক্সিজেন সেবা দেওয়া যাবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজী বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্য ট্যাংক স্থাপনের কাজ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি এ মাসের মধ্যই সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে। আগামী মাস থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে শুরুর ছয় মাস পর্যন্ত ইউনিসেফ নিজস্ব লোক দিয়ে কাজ করবে। এ সময়ের এটি পরিচালনার জন্য আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২১
এসএইচডি/এএ