রাজশাহী: এখন থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের সব পরীক্ষা হাসপাতালের প্যাথলজিতেই হবে। এজন্য সংক্রমিত ব্যক্তিকে হাসপাতালের বাইরে যেতে হবে না।
রোববার (১ আগস্ট) থেকে হাসপাতালের নির্ধারিত প্যাথলজি বিভাগগুলোতে এ কার্যক্রমের নির্দেশনা দিয়েছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সকাল ১১টার দিকে নিজ সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন। সেখানে এসব তথ্য জানান।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক বলেন, রোগীরা হলো আমাদের কাছে ‘ভিআইপি’। খুব শিগগিরই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সমস্ত প্যাথলজিক্যাল টেস্ট হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগেই করা হবে। এজন্য হাসপাতালে সক্ষমতা আরও বাড়ানো হচ্ছে।
বর্তমানে ১ হাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ল্যাব টেকনোলজিস্ট আছেন মাত্র ১১ জন। যাদের মধ্যে ব্লাড ব্যাংকে পাঁচজন কাজ করেন এবং প্যাথলজিগুলোতে কাজ করেন ছয়জন। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ সংখ্যক জনবল দিয়ে উত্তর বঙ্গের বৃহৎ এ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য। তাই শিগগিরই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্যাথলজি বিভাগগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
আর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য আউটডোর, ইনডোর, ওয়ান স্টপ সার্ভিস ও কার্ডিয়াক প্যাথলজি নামে চারটি আলাদা প্যাথলজি সেবা চালু করা হবে। রোগীদের যাতে ছোটাছুটি করতে না হয় সেজন্য হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর কাছে স্থাপন করা হবে কালেকশন পয়েন্ট। যেখান থেকে রোগী বা স্বজনরা টেস্ট সংশ্লিষ্ট সব তথ্য ও সেবা পেতে পারবেন। এমনকি ওয়ার্ডের বিছানায় শুয়ে থাকা গুরুতর রোগীদের সেখানেই টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে। এসবের জন্য নামমাত্র সার্ভিস চার্জ নেওয়া হবে।
এ সময় হাসপাতালটির সেবা ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে পরিচালক জানান, আড়াই কোটি টাকা অনুমোদন মিলেছে সদর হাসপাতাল চালুর জন্য। এরইমধ্যে কনস্ট্রাকশন কাজ শুরু হয়ে গেছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালুর জন্য স্পেক্ট্রা ও নেওয়া নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। আশা করা হচ্ছে আগামী দুই মাসের মধ্যেই হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করা সম্ভব হবে। এটি হবে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল। এতে রামেক হাসপাতালে করোনা রোগীদের চাপ কমবে এবং হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম আগের মতোই দেওয়া সম্ভব হবে।
রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে আসছে। জুলাই মাসে হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গে মারা গেছে ৫৩১ জন। যাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছে ১৮০ জন।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের একটা বড় অংশই এখন পাবনা থেকে আসছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে করোনার ঢেউ এখন ঢাকার দিকে ছুটছে। আর হাসপাতালে যারা আসছেন তাদের সবারই অক্সিজেন লাগছে। কারণ অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০/৯২ নামার পরই রোগীরা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ছেন। আর ঠিক তখন হাসপাতালে আসছেন। যাদের অতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিস এবং কিডনি রোগ আছে তাদের মধ্যে করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি লক্ষ্য করা গেছে বলে উল্লেখ করেন পরিচালক।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২১
এসএস/আরবি