রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এলাকা ও জেলার প্রতিটি উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে করোনার গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় এ কার্যক্রম চলছে।
এসব কেন্দ্রে সকাল থেকেই মানুষ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু প্রথম দিনের বরাদ্দ শেষ হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রে আসা সবাইকেই টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে টিকাপ্রত্যাশীদের অনেক পরে স্বাস্থ্যকর্মীরা পৌঁছেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মহানগরের ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ৮৪টি কেন্দ্রে শনিবার থেকে একযোগে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ বিশেষ গণটিকা কার্যক্রম চলবে আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত। ছয় দিনের এ ক্যাম্পেইনে এক লাখ ৫০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে রাসিক। প্রতিদিন ২৫ হাজার জনকে মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
এছাড়া রাজশাহী জেলার ৭৩টি ইউনিয়নে গণটিকা কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে চলবে কেবল আজকেই। আগামী ১৪ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে পুরোদমে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে। ইউনিয়নের প্রতিটিতে তিনটি করে বুথ থাকবে। ইউনিয়নের প্রতি বুথে ৬০০ জন করে করোনা টিকা পাবেন। বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কারণ গ্রামের নারীরা রেজিস্ট্রেশন কম করেছেন। তবে গণটিকার আগে শুধু শনিবারই পরীক্ষামূলক টিকাদান করা হচ্ছে। সকালে পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবীর। দুপুর ১২টার দিকে তিনি মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, আজ সকাল থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সীদের পরিবর্তে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে টিকাদান কার্যক্রম সফল করতে মহানগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, মহানগরের প্রতিটি কেন্দ্রে দু’জন টিকাদানকারী (স্বাস্থ্যকর্মী) ও তিনজন স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করছেন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, টিকাদান কেন্দ্রে বয়োজ্যষ্ঠ, নারী ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ক’দিন প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনলেই দেওয়া হবে টিকা। তবে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই যারা টিকা নেবেন, তাদের টিকা নেওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ ক্যাম্পেইন চলাকালে রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, পুলিশ হাসপাতাল কেন্দ্র, আইডি হাসপাতাল কেন্দ্র, রাজশাহী সিএমএইচ কেন্দ্রের টিকাদান কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার জানান, জেলার নয়টি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে আজকে পরীক্ষামূলক গণটিকা কার্যক্রম চলছে। আগামী ১৪ আগস্ট থেকে পুরোদমে টিকা কার্যক্রম চালু হবে। শহর এলাকায় মডার্নার টিকা ও ইউনিয়ন সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দিন কোথাও কোথাও সামান্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকতে পারে। তবে আজকের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতেই পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রম। পরবর্তীতে তা সমাধান করা হবে ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই গণটিকা কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২১
এসএস/আরবি