ঢাকা: আকলিমা খাতুনের বয়স ছুঁয়েছে আশির কোটা। ছেলের সঙ্গে পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জে সূর্যের হাসি পারিবারিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন করোনার টিকা নিতে।
রোববার (৮ আগস্ট) গণটিকার দ্বিতীয় দিনে আকলিমা খাতুন টিকা নিয়ে নিজের হতাশার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন। শুধু আকলিমা নন, পুরান ঢাকার টিকাকেন্দ্রগুলোতে নারীদের ভিড়ই বেশি দেখা গেছে। কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত জনপ্রতিনিধিরাও জানান একথা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণটিকা কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছিল সূর্যের হাসি পারিবারিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। শনিবার (৭ আগস্ট) সেখানে বেশ ভিড় থাকলেও আজ সু-শৃঙ্খলভাবেই পরিচালিত হচ্ছিল গণটিকা কর্মসূচি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ম্যানেজার আব্দুল কাদের ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা আগের রাতেই টিকা নেওয়ার জন্য ৩১৭ জনকে টোকেন দিয়েছি। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ’
শনিবার সব মিলিয়ে ৩১৪ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গণটিকা কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা সাঈদ খোকন কমিউনিটি সেন্টারে ওয়েটিং রুম এবং রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রেখেছি। যারা টিকা দেবেন, শুধুমাত্র তারা আমাদের ক্লিনিকে প্রবেশ করেছেন। ’
একই চিত্র দেখা গেছে পার্শ্ববর্তী ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে চলছিল রেজিস্ট্রেশন। টিকা দেওয়া হচ্ছিল পাশ্বর্বতী সূর্যের হাসি পারিবারিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদ উল্লাহ মিনু বাংলানিউজকে বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচিতে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ’
৪০ নম্বর ওয়ার্ডেও গণটিকা কর্মসূচি চলেছে সূর্যের হাসি পারিবারিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ম্যানেজার ফেরদৌসী বেগম সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছিলেন। বলছিলেন, ‘টিকা নিতে এসে কেউ যেন করোনায় আক্রান্ত না হন। ’
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা কাউন্সিলরের কার্যালয়ে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রেখেছি। সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে এরপর আমাদের ক্লিনিকের নিচতলায় টোকেন নিতে হবে। এরপরই দেওয়া হবে টিকা। ’
তিনি জানান, শনিবার (৭ আগস্ট) ৩০৮ জনকে টিকা দিয়েছেন তারা। রোববারের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫০ জন।
৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরচাঁন সর্দার কমিউনিটি সেন্টারে গণটিকা কর্মসূচি পরিদর্শনে এসেছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে টিকা নিতে ইচ্ছুক এমন মানুষের সংখ্যা বেশি। সেজন্য বয়স্ক ও নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ’
সবাইকে কর্মসূচির আওতায় আনতে টিকার সংখ্যা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সারাদেশে ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠী, নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে শনিবার সকাল ৯টা থেকে করোনার গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে, যা চলবে ১২ আগস্ট পর্যন্ত।
কর্মসূচির আওতায় দেশের ৪ হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে, ১ হাজার ৫৪টি পৌরসভায় এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে একযোগে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এতে ৩২ হাজার ৭০৬ জন কর্মী ও ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২১
ডিএন/এএটি