ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার অব্যাহতি, করোনা পরীক্ষা বন্ধ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার অব্যাহতি, করোনা পরীক্ষা বন্ধ!

রাজশাহী: দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার অব্যাহতির পর গত তিন দিন ধরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।  

শুক্রবারের (১৭ ডিসেম্বর) পর হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে আর করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

তবে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে আগের নিয়মেই নমুনা পরীক্ষা চলছে।

শুক্রবার এসএম হাসান এ লতিফ ও হামিদ আহমেদ নামের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অব্যাহতি নেন। তার পর থেকেই মূলত হাসপাতালের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে ২০২০ সালের মার্চে তাদের ডিএনএ ল্যাব থেকে রামেকে পিসিআর ল্যাব চালুর জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল।  

রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গত ১১ ডিসেম্বর অব্যাহতি চেয়ে হাসপাতাল পরিচালক বরাবর চিঠি দেন। পরিচালকের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ল্যাবে কাজ করেন। তবে ১৭ ডিসেম্বর থেকে তারা আর ল্যাবে আসেননি।

আরও জানা যায়, সম্প্রতি রামেক হাসপাতাল ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষার কিট নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্তে গঠিত কমিটি কিট গায়েবের ব্যাপারে উচ্চতর তদন্তের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে দুই কর্মকর্তাকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ঝুলে ছিল। এরই মধ্যে এই দুই কর্মকর্তা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সঙ্গে ল্যাবের দুই টেকনোলজিস্ট দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন। এরই জেরে ওই দুই টেকনোলজিস্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কিট নয়ছয়ের অভিযোগ আনা হয়। নথিপত্র সংরক্ষণ ত্রুটি থেকে এমন কাণ্ড ঘটতে পারে। কাগজেকলমে ৪৯ হাজার ৪০০ কিটের মধ্যে প্রায় সবই ব্যবহার দেখানো হয়।  

অভিযোগকারীদের দাবি, অন্তত দুই হাজার কিট গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৯ নভেম্বর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান শাহ আলমকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ কমিটি কিট গায়েবের প্রত্যক্ষ প্রমাণ পায়নি। তবে শুধু অভিযোগকারীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দুই কর্মকর্তাকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম হাসান এ লতিফ বলেন, আমাদের ডিএনএ ল্যাবেই এখন কাজের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। তাই অব্যাহতি নিয়েছি। এছাড়া করোনার ভয়াবহ সময়ে আমরা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কোনোরকম সম্মানি ছাড়াই কাজ করেছি।

রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, দেশে করোনার ক্লান্তিকালে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে তাদের কাজে লাগানো হয়েছিল। ডিএনএ ল্যাবে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় তারা অব্যাহতি নিয়েছেন। ফলে দক্ষ জনবলের অভাবে হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাব আপাতত বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ নন। তবুও দক্ষ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জনবল পেলেই ল্যাবটি চালু হবে। এছাড়া এখন করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী তাই রামেক ল্যাবেই এই পরীক্ষা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
এসএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।