রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা সদর হাসপাতালে ১১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১১টি আসনের বিপরীতে শত গুণ রোগী বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকালে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছেন শতাধিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী। শুধু মেঝেই নয়, যে যেখানে জায়গা পেয়েছেন সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রাজবাড়ী সদরের ধুনচী এলাকার বাসিন্দা ফজলু শেখ বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে ডায়রিয়া নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে আছি।
আরেক ডায়রিয়া রোগী রোকেয়া বেগম বলেন, আমার মতো শতাধিক রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সদরের লক্ষ্মীকোল এলাকার গৃহবধূ পূর্ণিমা রাণী বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আমি মঙ্গলবার ভর্তি হয়েছি। বেশির ভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মিনতি রায় চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ওয়ার্ডে ১২টি ও ১০টি ফ্লোরিংয়ের ব্যবস্থা আছে। বেড সংখ্যা কম থাকলেও ওষুধপত্র সব পর্যাপ্ত আছে। সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, রাজবাড়ীতে গত কয়েকদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। ফলে ফ্লোরেও রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে চিকিৎসার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত স্যালাইন ও নার্সরা আছেন।
তিনি আরও বলেন, কেউ ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে পানি শূন্যতা যেন না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। আর এজন্য পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার খেতে হবে। তবে কোনো রোগীর পাতলা পায়খানার সঙ্গে বমি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিতে হবে। রোগীর সংখ্যা বেশি হলে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মো. ইব্রাহিম টিটন বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান ও চিকিৎসাসেবা দিতে তিনটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি সবার প্রতি পরামর্শ রাখেন— ভালোভাবে হাত ধোয়া, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, পানি পানের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা থেকে বেশি বেশি খাবার স্যালাইন খাওয়া। সবাইকে সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
এসআরএস