ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের মান্দারপুর গ্রামে নিখরচে তিন শতাধিক রোগীর চোখের চিকিৎসা দিয়েছে বসুন্ধরা আই হসপিটাল।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বসুন্ধরা আই হসপিটাল এবং ঢাকাস্থ মান্দারপুর সমিতির যৌথ উদ্যোগে এ চক্ষু চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মান্দারপুর গ্রামে স্থাপিত মা আমেনা গফুর হাসপাতালে এ চক্ষুসেবা ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বী, অপটোমেট্রিস্ট গাজী রিয়াজ রহমানসহ সাতজনের একটি দল বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা দেন।
এ সময় ঢাকাস্থ মান্দারপুর সমিতির উপদেষ্টা এম এ কাউয়ুম সরকার, সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. হুমায়ুন কবির, আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া সোহাগ, বাদৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিপন আহম্মেদ ভূঁইয়াসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. রইজ উদ্দিন জানান, তিনশ রোগীর নাম আগে থেকেই লিপিবদ্ধ করা হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ জন রোগীকে অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে অনেককে ব্যবস্থাপত্রের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে বাছাই করা রোগীদের বিনা মূল্যে অপারেশন করবে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
কৃষক আব্দুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাইতে হত। এখন বাড়ির সামনেই বসুন্ধরা আই হসপিটালের মাধ্যমে ফ্রি চিকিৎসা করেছি। একটা টাকাও লাগে নাই।
শ্রমিক আমির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চোখের সমস্যা চার বছর ধরে। টাকা যোগাড় করতে পারি না, ডাক্তারও দেখাতে পারি না। গ্রামের লোকজনের মাধ্যমে খবর পাই চোখের চিকিৎসা হবে এখানে। তাই খবর পেয়ে চলে আসছি ডাক্তার দেখাতে। ভিজিটও লাগে নাই। ফ্রি ওষুধও দিয়েছে।
বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মান্দারপুর গ্রামের বৃদ্ধা মমিনা খাতুন (৯০) বাংলানিউজকে বলেন, স্বামী মারা গেছে ৩০ বছর হয়েছে। দুই ছেলে বিয়ে করে আলেদা থাকে। বয়স্ক ভাতা আর গ্রামের লোকজনের সহযোগিতায় কোনোভাবে চলি। কয়েক বছর ধরে (চহে) চোখে ঝাপসা (দিহি) দেখি। টাকার (টেহার) জন্য চিকিৎসাও করাতে পারি না। এখন (অহন) শুনছি বাড়ির সামনে চোখের ডাক্তার আইব। টেহা পয়সা ছাড়াই চিকিৎসা করছি। আল্লাহ কাছে দোয়া করি তারা সব সময় এই সেবা দিয়ে যাক।
রেনু বেগম নামে এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, আমার স্বামী দৈনিক শ্রমিকের কাজ করে। দিনে যে টাকা আয় করে তা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়ে যায়। আবার নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বেড়ে চলছে সংসার চালাবো না চিকিৎসা করাবো। আমার একটি চোখে তিন বছর ধরে ঠিকমত কিছু দেখি না। প্রাইভেট হাসপাতালে গেলে অনেক টাকার দরকার। আমাদের গ্রামে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা পাওয়াতে ডাক্তারকে দেখাতে পেরেছি। এখন অপারেশনের দরকার হলেও ফ্রিতে করিয়ে দেবে বলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
আরএ