সাতক্ষীরা: সারাদেশে ক্রমেই নিচের দিকে নামছে তাপামাত্রার পারদ। এর প্রভাব পড়েছে সাতক্ষীরায়ও।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দৈনিক একশ থেকে দেড়শ শিশুকে আউটডোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৮ জন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ৪০ জন, আর সামেকহাসপাতালে ভর্তি রয়েছে শতাধিক শিশু। এছাড়া প্রতিদিন এ দুই হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে ২ শতাধিক শিশু। গত সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম। আর তার আগের সপ্তাহে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল ১১ জন। সদর হাসপাতালে এ সংখ্যা ছিল ১০। আর সামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিল মাত্র ১৩ জন শিশু।
চিকিৎসকরা বলছেন, সাতক্ষীরায় শীতের আগমন ঘটেছে আরও দুই সপ্তাহ আগে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও রাতে বেশ শীত পড়ছে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই তারা সহজেই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এছাড়া ধুলা-বালির আধিক্যের কারণেও তারা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে।
সদর উপজেলার খেজুরডাঙ্গি এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলের বয়স তিন বছর। বেশ কয়েকদিন ধরে তার কাশি ও শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা এলাকার আমিনা খাতুন বলেন, আমার মেয়ের বয়স আড়াই বছর। গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) থেকে মেয়েটির জ্বর। প্রথমদিকে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়াচ্ছিলাম। সকালে তার খিচুনি হচ্ছিল। তাই দেরি না করে তাকে সামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। চিকিৎসকরা বলছেন, সে নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়েছে।
সদর উপজেলার আগরদাড়ি এলাকার আমিনুর রহমান জানান, তার ছেলের বয়স চার বছর। কয়েকদিন তার হাল্কা শ্বাসকষ্ট ছিল। সোমবার (২১ নভেম্বর) থেকে পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তাই চিকিৎসার জন্য তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক আবুল বাশার বলেন, শিশুদের সর্দি-জ্বর এমনিতে কয়েকদিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে অবস্থা গুরুতর হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এছাড়া শিশুদের যাতে কোনভাবে শীতে ঠাণ্ডা না লাগে, সে বিষয়টি খেয়াল করতে হবে।
পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
সামেক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আল আহমেদ আল মাসুদ জানান, হাসপাতালে শিশুদের জন্য ৩০টি বেড রয়েছে। পরিপূর্ণ থাকছে বেডগুলো। বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বাড়ায় অনেককে মেঝেতে রাখতে হচ্ছে। এছাড়া আউটডোরে তো ব্যাপক চাপ। শীতকালে ধুলাবালির প্রকোপ বাড়ায় শিশুরা সহজেই শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে। শুধু শিশুরা নয়, বয়স্ক ব্যক্তিরাও অধিক হারে আক্রান্ত হচ্ছেন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে। মূলত ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষার বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
এমএমজেড