ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ভারতে রেল সফরে ৩৫ পয়সায় ১০ লাখের বীমা, সুবিধা পাবেন বাংলাদেশি যাত্রীও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
ভারতে রেল সফরে ৩৫ পয়সায় ১০ লাখের বীমা, সুবিধা পাবেন বাংলাদেশি যাত্রীও

কলকাতা: ভারতে রেল সফরকারে যাত্রী টিকিটের সঙ্গে পাচ্ছেন বিমা পরিষেবা।  এ সেবা পেতে খরচ করতে হবে ট্রেনের টিকিটের সঙ্গে ভারতীয় মুদ্রায় অতিরিক্ত মাত্র ৩৫ পয়সা! বিমাটি করলেই ওই ভ্রমণে দুর্ঘটনা ঘটলে এবং এতে যাত্রীর মৃত্যু হলে বা পঙ্গুত্ব বরণ করলে মিলবে ১০ লাখ টাকা! আর শুধু ভারতীয়রাই নয় এ বিমার আওতায় পড়ছেন বিদেশি যাত্রীরাও।

প্রতিদিনও ভারতের রেল সফর করেন অনেক বাংলাদেশি। তারাও এই বিমা পরিষেবা নিতে পারেন।

অথচ বেশিরভাগ ভারতীয় ও বিদেশি যাত্রীরা জানেন না এ বিমা পরিষেবার কথা।  

ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, প্রায় ৯০ শতাংশর বেশি যাত্রী জানেন না রেলে সফরকালে বিমা পাওয়া যায়।  

সম্প্রতি ওড়িশার বালেশ্বরে করমন্ডল এক্সপ্রেসে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় ২৮৮ জন যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হন সহস্রাধিক। এখন চিকিৎসাধীন ২০০ জন। এই ঘটনার পরই দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের চিন্তা বেড়েছে।  

দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার কিংবা সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে বোঝা হয়ে দাঁড়ানো ব্যক্তির পরিবার চলবে কীভাবে? 

এর পরই ৩৫ পয়সায় ১০ লাখের বিমার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

দুর্ঘটনায় সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হয়েছে, যা জানেন সবাই। তবে অনেকেরই জানা নেই, ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেনে সফরকালে বিমার ব্যবস্থা করে থাকে। অধিকাংশ যাত্রী সেই বিমার সুযোগ বা সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে যায়।  বড় ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন রেল সফরকালে মৃতু বা আহত যাত্রীর পরিবার।  

কারণ, টিকিট কাটার সময় বিমার বিষয়টি যাত্রীরা অজ্ঞতাবশত এড়িয়ে যান। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, রেলের টিকিট যিনি বিক্রি করছেন অথবা এজেন্টরা এই বিমার বিষয় নিয়ে যাত্রীদের সচেতন করেন না, এড়িয়ে যান। যার ফলে বহু যাত্রী এই বিমার বিষয়ে জানতে পারেন না।

ভারতের দূরপাল্লার ট্রেনের সংরক্ষিত আসনে এই ভ্রমণ বীমা কোনো নতুন বিষয় নয়। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে এটি চালু রয়েছে।  

ভারতীয় রেলের সহযোগী সংস্থা আরআইসিটিসির অধীনে এ ভ্রমণ বীমা হয়ে থাকে। এটি আরআইসিটিসির একটি ঐচ্ছিক পরিষেবা। যাত্রীরা চাইলে নিতেও পারেন, আবার না-ও নিতে পারেন। অর্থাৎ ই-টিকিট কাটার সময় ভ্রমণ বীমা করা বাধ্যতামূলক নয়।  

এই পরিষেবা নিতে চাইলে টিকিট বুকিংয়ের সময় তা যাত্রীদের বেছে নিতে হবে। একবার টিকিট বুকিং করা হয়ে গেলে পরবর্তীতে এ সুবিধার অংশীদার হওয়া যাবে না। এই বিমার খরচ গোটা ভারতের সব রুটেই এক, ভারতীয় মুদ্রায় ৩৫ পয়সা।

বিমার মধ্য দিয়ে কি কি পরিষেবা দিয়ে থাকে ভারতের রেল? 

১) সংরক্ষিত আসনে রেলে সফরকালে কোনো কারণে যাত্রীর মৃত্যু হলে তার পরিবারের ১০ লাখ রুপি বিমার দাবি করতে পারেন।  

২) দুর্ঘটনায় সেই যাত্রী স্থায়ীভাবে অক্ষম বা পঙ্গু হয়ে গেলে তাকেও ১০ লাখ রুপির বীমা দেবে ভারতীয় রেল।  

৩) কেউ সফরকালে দুর্ঘটনায় আংশিকভাবে অক্ষম হলে তাকে সাড়ে ৭ লাখ রুপি বীমা দেওয়া হয়।  

৪) ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে হাসপাতালে চিকিৎসা বাবদ ২ লাখ রুপি পাবেন বীমা উপভোক্তা।  

৫) মৃতদেহের সৎকারের জন্য পরিবারকে দেওয়া হয় ১০ হাজার রুপি।

কলকাতার মারকুইস্ট্রিটের তাজ ট্রাভেলের এজেন্ট শাকিল বলেন, বীমা পরিষেবা নিতে অবশ্যই টিকিট হতে হবে নিজের নামে। ট্রেনের ই-টিকিট কাটার সময় ট্রাভেল ইনসিওরেন্সের বিষয়টি জানাতে হবে। দিতে হবে যাত্রীর ইমেইলে অ্যাড্রেস, জানাতে হবে নমিনির নাম এবং তথ্য। সেই ই-মেইলে একটি ওটিপি যাবে, সেই ওটিপি কনফার্ম করলে বিমার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান যাত্রীটি। আসলে এতসব ঝামেলায় যেতে চান না যাত্রীরা। তারা শতভাগ নিশ্চিত থাকেন তার এই সফর হবে সম্পূর্ণ ঝঞ্ঝাটমুক্ত এবং নিরাপদ। কারণ, বিপদের আশঙ্কা নিয়ে কেউ কি আর সফরে বের হতে চায়!

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, ১১ জুন, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।