ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ভারতে পাচারকালে ৪৫ স্বর্ণের বারসহ আটক ১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
ভারতে পাচারকালে ৪৫ স্বর্ণের বারসহ আটক ১

কলকাতা: আবারও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৪৫টি স্বর্ণের বারসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।  

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪পরগনা জেলার পেট্রাপোল স্থলবন্দর থেকে স্বর্ণের বারসহ তাকে আটক করা হয়।

জব্দ করা স্বর্ণের ওজন ৫২৪২. ৯১০ গ্রাম। যার ভারতীয় বাজার মূল্য আনুমানিক ৩ কোটি ১০ লাখ রুপির বেশি।

শনিবার (২৬ আগস্ট) বিএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৫ নাগাদ বেনাপোল থেকে আসা একটি ট্রাককে তল্লাশির জন্য থামানো হয়। পরে ট্রাকের হোস পাইপের কাছে তৈরি একটি গর্ত ভেতরে স্কচটেপে মোড়ানো ও কাপড়ে বাঁধা ২১টি স্বর্ণের বার জব্দ করে বিএসএফ। এ সময় ট্রাকচালককে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। সম্রাট বিশ্বাস নামে আটক ট্রাকচালক উত্তর ২৪পরগনা জেলার পিরোজপুর গ্রামের বাসিন্দা।  

এরপর সমস্ত নথিপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন জব্দ করা ২১টি স্বর্ণের বার ও ট্রাকচালককে পেট্রাপোল কাস্টম অফিসের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছিল তখন সেই ট্রাকে আরও স্বর্ণের বার লুকিয়ে থাকার বিষয়ে জানতে পারে বিএসএফ। তাৎক্ষণিকভাবে এক সিভিল মেকানিককে ডেকে ট্রাকের ইঞ্জিন খুলে তল্লাশি চালিয়ে আরও ২৪টি স্বর্ণের বার স্কচটেপে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। এভাবে ৪৫টি স্বর্ণের বার জব্দ করে বিএসএফ।

জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট জানিয়েছে, তিনি ট্রাকচালক হিসেবে কাজ করেন এবং নিয়মিত রপ্তানি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে যান। তিনি গত ২১ আগস্ট একটি ট্রাকে স্পঞ্জ আয়রনবোঝাই করে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। ২৫ আগস্ট ভারতে ফেরার সময় বাংলাদেশ ট্রাক পার্কিং এলাকায় বেনাপোলের বাসিন্দা সুমন মণ্ডলের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। ওই সুমনই ৪৫টি স্বর্ণের বার তাকে দেন। সুমন মণ্ডলের নির্দেশে ভারতে এসে ওই স্বর্ণের বারগুলো বনগাঁ অঞ্চলের গোপালনগর গ্রামের সালাম মণ্ডলের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই ভারতে প্রবেশের সময় পেট্রাপোলের প্রধান ফটকের কাছে ধরা পড়ে যান বিএসএফের হাতে। আটক চোরাকারবারিকে জব্দকৃত স্বর্ণের বারসহ পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলকাতার প্রিভেনশন অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন (পিঅ্যান্ডআই) কাস্টম অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিএসএফের গোয়েন্দারা এও জানতে পেরেছে যে বনগাঁ অঞ্চলে গোপালনগরের বাসিন্দা সালাম মণ্ডল, পেট্রাপোলের বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন কারিগর ওরফে সামাদ মণ্ডল স্বর্ণ চোরাকারবারের সঙ্গে যুক্ত। আর এ চক্রের প্রধান পেট্রাপোল লাগোয়া জয়ন্তীপুর গ্রামের বাসিন্দা আজগর শেখ।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছিল বিএসএফ। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার করিমপুরের মুরুটিয়া থানা এলাকার ঘটনা। জব্দ হওয়া স্বর্ণের বারের ভারতীয় বাজার মূল্য ৭০ লাখ রুপির কাছাকাছি। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা রায়েল মণ্ডল (২৫) নামে একজন পাচারকারীকেও আটক করা হয়েছে। জব্দ করা স্বর্ণের ওজন ছিল ১ কেজি ২০০ গ্রাম। এসব স্বর্ণ চোরাকারবারিরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করার চেষ্টা করছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে রায়েল বিএসএফকে জানিয়েছিল, বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলার সোরতলা গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখের কাছ থেকে স্বর্ণের বারগুলো সংগ্রহ করে নদিয়ার বৈজনাথপুরের বাসিন্দা চাঁদ মণ্ডলকে দেওয়ার কথা ছিল তার। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) আটক ব্যক্তি ও বাজেয়াপ্ত স্বর্ণের বারগুলো নদিয়ার করিমপুর শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ।

বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি একে আর্য বলেছেন, একের পর এক স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা রুখে দিয়ে বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ এগিয়ে এলে আমাদের কাজ আরও সহজ হবে। চোরাকারবারিদের প্রতি ডিআইজির হুঁশিয়ারি, তারা যেন চোরাচালানের পথ ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যায়। অন্যথায় কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।