ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

শারদ উৎসবে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে ত্রিপুরা সরকারের কড়া সিদ্ধান্ত 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
শারদ উৎসবে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে ত্রিপুরা সরকারের কড়া সিদ্ধান্ত 

আগরতলা(ত্রিপুরা): শারদ উৎসবকে ঘিরে ত্রিপুরা রাজ্যের একটা সংস্কৃতি ছিল। কিন্তু এখন সেই সংস্কৃতি ঐতিহ্য দুর্গাপূজার ভাসানের জন্য  বিলুপ্তির পথে এসে দাঁড়িয়েছে।

 

ভাসানের শোভাযাত্রায় অবাদে ও প্রকাশ্যে মদ্যপান থেকে শুরু করে উচ্চস্বরে আধুনিক নাচগানের  অত্যাচারে রাজ্যবাসীর প্রাণ  উষ্ঠাগত। রাজ্যের জনগণ চাইছেন এই সব থেকে মুক্তির পেতে। রাজ্য সরকারও শব্দ দানব থেকে মুক্তি দিতে চিন্তা ভাবনা করে চলেছে। ইতিমধ্যেই এবছর মায়ের গমন অনুষ্ঠানে ডিজের ব্যবহার বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উদ্যোগে আগরতলার সুকান্ত একাডেমিতে পুজোর দিনগুলিতে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে পূজা উদ্যোক্তাদের নিয়ে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা, দপ্তরের সচিব কে শশী কুমার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক ডা বিশাল কুমার, পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার ড,কিরণ কুমার কে সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

উৎসবের দিনগুলোতে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত রাখতে এই মতবিনিময় সভায় কিছু বিধি মেনে চলার আবেদন রেখেছে ত্রিপুরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেগুলো হল, উৎসবের দিনগুলোতে (অক্টোবর ১০-১৩, ২০২৪ এবং নভেম্বর ০১, ২০২৪) স্থানীয় সময় রাত ১২টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত মাইক্রোফোন, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।

নীরব অঞ্চলের অর্থাৎ হাসপাতাল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আদালতের একশ মিটারের মধ্যে মাইক বাজানো বা বাজি ফোটানো যাবে না।

বাজি ফোটানোর জায়গার ৫ মিটার দূরত্বে ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ সৃষ্টিকারী বাজি মজুত, বিক্রয় এবং ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

পূজা পরবর্তী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও মাইক বাজাতে হলে সংশ্লিষ্ট মহকুমা পুলিশ অফিসারের অগ্রিম অনুমতি নিতে হবে। প্রকাশ্য স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাত ১০টার মধ্যে অবশ্যই শেষ করতে হবে।

জেলা প্রশাসন, পুর নিগম, পুর পরিষদ এবং নগর পঞ্চায়েত কর্তৃক নির্ধারিত দিনে ও নির্দিষ্ট স্থানে প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে এবং বিসর্জনের নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে।

মূর্তি বিসর্জনের জন্য ব্যবহৃত যানবাহনে মাইক বাজাতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অগ্রিম অনুমতি নিতে হবে এবং শব্দের মাত্রা নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখতে হবে।

পূজামণ্ডপ ও মূর্তি তৈরি, প্রসাদ বিতরণ এবং পূজা সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে নিষিদ্ধ এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উপকরণ অথবা থার্মোকল দ্বারা তৈরি পদার্থ ব্যবহার করা যাবে না। শুধু পরিবেশ-বান্ধব পদার্থ ব্যবহার করতে হবে।
মূর্তি তৈরিতে প্লাস্টার অফ্ প্যারিস জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ এবং মূর্তির রং করার জন্য ভারী ধাতু (মার্কারি, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিক, লেড ও ক্রোমিয়াম) যুক্ত সিনথেটিক রং ব্যবহার করা যাবে না। ব্যবহার করা যাবে পচনশীল প্রাকৃতিক রং।

মূর্তির উচ্চতা ২০ফুটের বেশি এবং পূজা প্যান্ডেলের সর্বাধিক উচ্চতা ৪০ ফুটের বেশি করা যাবে না।
পূজা উদ্যোক্তাদের এই নিয়ম নীতিগুলো মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। নিয়ম নীতিগুলো না মানা হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে পূজা উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে বলেও আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদমধ্যেকে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।