ঢাকা, রবিবার, ২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

ভারত

ওয়াকফ আইন বাংলায় কার্যকর হবে না: মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
ওয়াকফ আইন বাংলায় কার্যকর হবে না: মমতা

কলকাতা: ভারতে সংশোধিত ওয়াকফ আইন পাস হওয়ায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ।

সবচেয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। গত কয়েকদিনে ব্যাপক অশান্তির খবর সামনে আসে ওই জেলার সুতি, ধুলিয়ান, রঘুনাথগঞ্জ, সামশেরগঞ্জের মতো এলাকাগুলিতে।

অন্যদিকে সহিংসতার ছবি দেখা গেছে মালদা জেলার জঙ্গিপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণার আমতলা, চাঁপদানি থেকেও। তছনছ হয়েছে রেল ও বাসের মতো রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। একইভাবে উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতা।

এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর উদ্দেশে সহিংসতা না করার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার (১২ এপ্রিল) এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার সংশোধনী ওয়াকফ আইন সমর্থন করে না। বাংলায় তা কার্যকর হবে না। তা হলে এত হিংসা কেন? হিংসায় যারা উস্কানি দিচ্ছেন, তাদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। ’

মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘এই আইনটি বাংলার সরকার করেনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই যা উত্তর চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে। কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। ’

তিনি লিখছেন, ‘সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনও অধার্মিক আচরণ করবেন না। প্রত্যেক মানুষের প্রাণই মূল্যবান, রাজনীতির স্বার্থে অশান্তি করবেন না। অশান্তি যারা করছেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন। ’

‘আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন, এই আমার আবেদন। ’

মমতার এই বার্তা প্রকাশ্যে আসার কিছু আগেই রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিমও রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেছেন গুজবে কান না দেওয়ার। বিভিন্ন জায়গায় ‘গুজবের কারখানা’ চলছে বলেও উল্লেখ করেন জাভেদ শামিম। মুখ্যমন্ত্রীর মতোই পুলিশের শীর্ষকর্তারাও জানিয়েছেন, হিংসা বরদাস্ত করা হবে না।  চিহ্নিত করা হয়েছে উস্কানিদাতাদের। এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

মূলত, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিষয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা করছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই নিয়ে সংসদ ভবনে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার সংঘাতে জড়িয়েছেন। বিল বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

গত ৯ এপ্রিল কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে মহাবীর জয়ন্তী (বিভিন্ন ধর্মের প্রবর্তক) উপলক্ষে মঞ্চ থেকেই মমতা বলেছিলেন, বাংলায় কেউ ওয়াকফ সম্পত্তি কেড়ে নিতে পারবে না। মুসলিমদের উদ্দেশে মমতার বার্তা ছিল, মনে রাখবেন, দিদি আপনাদের সঙ্গে আছে। দিদি আপনাদের রক্ষা করবে। শুধু আপনাদের নয়, আপনাদের সম্পত্তিও রক্ষা করবে। আমাদের একে অপরের উপর থেকে আস্থা নষ্ট করলে চলবে না। আমরা একসঙ্গে থাকলেই জয় আসবে। আমার প্রতি বিশ্বাস রাখুন।

তারপরেও উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার পরিবর্তে সহিংসতা এবং সংঘর্ষের মতো  পরিস্থিতি তৈরি হয়। জার জেরে মুর্শিদাবাদে জারি হয় ১৪৪ ধারা। সেই প্রেক্ষাপটে মমতা আরও একবার বার্তা দিলেন যে, পশ্চিমবঙ্গে এই আইন কার্যকর হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৫
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।